বাসস
  ০৯ আগস্ট ২০২৩, ১৩:০৬

গোপালগঞ্জে ভূমিহীনরা প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৪ হাজার ৫২টি ঘর পেয়েছে

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ৯ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস) : মুজিব জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে গোপালগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ২৪৭টি নতুন ঘর গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার পেয়েছে। আজ সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘর বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরে  গোপালগঞ্জে ঘর ও ২ শতাংশ জমির কাগজপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে গোপালগঞ্জ, টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া ও মুকসুদপুর উপজেলায় আয়োজিত ঘর বিতরণ অনুষ্ঠান থেকে হস্তান্তর করা হয় । ৪ উপজেলায় ঘর বিতরণ অনুষ্ঠানে  গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম,  জেলা আওয়ামীলীগের  সভাপতি মাহবুব আলী খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ জোবায়ের হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব) মোছা. নাজমুন নাহার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসটি) মোঃ গোলাম কবির, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহাসিন উদ্দীন, মোঃ আল মামুন, ফেরদৌস ওয়াহেদ, এসএম ইমাম রাজী টুলু, উপজেলা চেয়ারম্যানগন সহ প্রশাসনের পদ্স্থ কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মী, উপকারভোগী প্রান্তিক জনগোষ্ঠির নারী পুুরুষ উপস্থিত ছিলেন।  
এ নিয়ে গোপালগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের মোট ৪ হাজার ৫২টি ঘর বিতরণ করা হলো । 
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছা. নাজমুন নাহার বলেন, জেলায় মোট গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা তালিকাভূক্ত করা হয়েছে ৪ হাজার ২৫২। এরমধ্যে ৪টি পর্যায়ে ৪ হাজার ১৭২টি ঘর বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৫২টি ঘর নির্মিত হয়েছে। এসব ঘর বিতরণ আজ বুধবার সম্পন্ন হয়েছে। ১২০টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে । 
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, এখন জেলায় তালিকা ভূক্ত গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা মাত্র ৮০। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মেয়াদ সরকার ২০২৫ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্যকোন কারণে ভূমিহীন ও গৃহহীন  শ্রেণিতে নতুন কোন পরিবার অন্তর্ভুক্ত হলে পরবর্তীতে তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিহ্নিত ( তালিকাভূক্ত) করে পুনর্বাসন করা হবে।      
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন,  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ১৩০ টি, মুকসুদপুরে ৪০টি, টুঙ্গিপাড়ায় ৩৭টি ও কোটালীপাড়ায় ৪০টিসহ মোট ২৪৭টি ঘর আজ বুধবার গোপালগঞ্জ জেলায়  বিতরণ করা হয়েছে। এরমধ্য দিয়ে আমরা এ পর্যন্ত জেলার ৫ উপজেলায় ৪ হাজার ৫২ টি ঘর বিতরণ করেছি। 
জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম আরো বলেন, ভূমিহীন ও গৃহহীন প্রতি পরিবারকে দ্বি-কক্ষ বিশ্ষ্টি  ১টি সেমি পাকা ঘর, ( বাথরুম, বারান্দা, কিচেন যুক্ত) সাথে কবুলিয়ত, নামজারী খতিয়ান, সনদপত্র, নামজারী ডিসিআর প্রদান করা হয়েছে । এছাড়া প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা করা হয়েছে সুপেয় পানির ।
ঘর পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকদহ গ্রামের নজিরন বেগম (৪০) বলেন, মা-বাবা আমাদের জন্য যা করতে পারেন নি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা আমাদের জন্য করে দিয়েছেন।তিনি ঘর ও দুই শতাংশ জমি দিয়েছেন। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতঞ্জতা প্রকাশ করছি। আল্ল­াহর কাছে তাঁর জন্য সব সময় দোয়া-মোনাজাত করব। 
মানিকদহ গ্রামে ঘর পেয়ে খুশি জাহিদ মিয়া (৪৫) বলেন, নিজের ঘর ছিল না। তাই অন্যের জায়গায় থাকতাম। ভাড়া দিতে কষ্ট হত। স্ত্রী, সন্তাান নিয়ে স্বল্প আয়ে চলতে পারতাম না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘর দিয়েছেন। এখন মাথাগোঁজার জায়গা হয়েছে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে পাকা ঘরে থাকতে পারছি। এটি আমার জন্য পরম পাওয়া। এটি কখনো কল্পনাও করতে পারিনি, যে আমার ঘর হবে। এজন্য আল্লাহ যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো বারবার প্রধানমন্ত্রী করেন । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য এ শুভ কামনা । 
গৃহহীন ও ভূমিহীন জালাল মিয়া বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দীন, জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম আমাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন হিসেবে তালিকাভূক্ত করেছেন। অবশেষে আমাকে একটি ঘর দিয়ে বড় উপকার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে এ প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। তাই ঘর পেয়েছি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি চির কৃতঞ্জতা প্রকাশ করছি।