বাসস
  ০৯ আগস্ট ২০২৩, ১৪:০৮

পিরোজপুরের কমিউনিটি ক্লিনিক: মানুষের স্বাস্থ্য সেবার নির্ভরযোগ্য স্থান

পিরোজপুর, ৯ আগস্ট, ২০২৩ ( বাসস): জেলার পল্লী অঞ্চলের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে পল্লী এলাকার মানুষের নিত্য নৈমিত্তিক রোগ চিকিৎসা সেবা প্রদানের নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। প্রত্যন্ত অঞ্চলের এসব ক্লিনিকের দু’একটিতে এখন গর্ভবতী মা-দের স্বাভাবিক সন্তান প্রসব করানো হচ্ছে সযতেœ।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জেলার ৭ উপজেলার ৫৩ টি ইউনিয়নের ১শত ৭০ টি কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ৫ লাখ ২২ হাজার ৬৩১ জন রোগী চিকিৎসা ও ওষুধ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা হচ্ছে ৩ লাখ ২০ হাজার ৪৪৮ জন। একই সময় ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৪ জন পুরুষ এবং ২১ হাজার ১৭৪ শত শিশুও চিকিৎসা এবং ওষুধ নিয়েছে। পিরোজপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে উল্লেখিত সময় ৯ হাজার ৬০০ জন রোগীকে উন্নত চিকিৎসা প্রদানের জন্য পিরোজপুর, বরিশাল, খুলনা এবং ঢাকার সরকারি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। জেলার ১ শত ৭৬টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে বর্তমান সরকার ইতিমধ্যেই ১ শত ৭০ টি ক্লিনিক চালু করেছে এবং ২ টির নির্মাণ কাজ অতি সম্প্রতি শেষ হয়েছে এবং অচিরেই এ ২টি চালুর প্রস্তুতি চলছে। চালু কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে সদরে ১৭টি, নাজিরপুরে ২৮টি, নেছারাবাদে ৩০টি, কাউখালীতে ১৫টি, ভান্ডারিয়া ২৪টি, মঠবাড়িয়ায় ৪৪টি এবং ইন্দুরকানীতে ১২টি রয়েছে।
পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ হাসনাত ইউসুফ জ্যাকি বাসসকে জানান ,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে পল্লী এলাকার নারী-পুরুষ-শিশুর স্বাস্থ্য সেবা সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক চালুর এক যুগান্তকারী পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করেন। ২০০১ পরবর্তী সরকার এর নির্দেশে পিরোজপুরসহ সারাদেশের সকল কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করা হয়। ২০০৯ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া ক্লিনিক চালুর পাশাপাশি নতুন ক্লিনিক ভবণ নির্মাণ করছে। জ্বর, আমাশয়, গ্যাষ্ট্রিক, কাশি ডায়রিয়া, জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধ, ডায়রিয়া, বদ হজমসহ ৩৩ ধরনের রোগের ওষুধ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া পিরোজপুরের কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিকে নিরাপদে সন্তান প্রসব করানো হচ্ছে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েক জন নারী-পুরুষ এ প্রতিবেদককে জানান, বাড়ি থেকে অনতি দূরে এসব ক্লিনিক চালু হওয়ায় তাদের  অর্থ ও কষ্ট দুটোই লাঘব হচ্ছে এবং তারা ভীষণ ভাবে উপকৃত হচ্ছে। নাজিরপুর উপজেলার শেখ মাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান চৌধুরী নান্নু জানান, তার ইউনিয়নের ক্লিনিকে নিয়মিত যতœসহকারে আগত রোগীদের চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদান করা হয়। এসব কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ উপকৃত হচ্ছে। উমেদপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা গৃহবধু শাহিনুর বেগম (৩২) জানান ,তিনি নিজে তার স্বামী এবং ৩টি সন্তান এখান থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগের সুচিকিৎসা ও ওষুধ পাচ্ছি। এখানে এ ক্লিনিক না হলে আমাদের মত অস্বচ্ছল মানুষদের অনেক অর্থ ব্যয় ও কষ্ট করে শহরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হত, যা আমাদের পক্ষে সম্ভব হত না।