শিরোনাম
বান্দরবান, ১১ আগস্ট ২০২৩ (বাসস) : পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর আজ সকাল থেকে বান্দরবান সদরের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। তবে রুমা ও থানচি উপজেলার বিভিন্ন জায়গার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায়, জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ আজও বন্ধ আছে।
বান্দরবান সদরের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ চালু হওয়ার কথা জানিয়ে জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঝুন্টু দাশ বাসসকে বলেন- এর আগে টানা বর্ষণে বান্দরবান কেরানীহাট সড়ক পুরোপুরি ডুবে যাওয়ায় ওই সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিলো।
এদিকে, প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পার্বত্য জেলায় নি¤œাঞ্চল থেকে পানি নেমে যাওয়ায় ১৯১টি আশ্রয়কেন্দ্র থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছেন বন্যা ও পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্তরা। ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। জেলা সদরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ।
এদিকে, বান্দরবানের বন্যায় ও পাহাড় ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
পাহাড় ধসে মারা যাওয়া নিহতরা হলেন- বান্দরবান সদরের টংকাবতী ইউনিয়নের মুসলিম সিকদার পাড়ার মো. ইউনুস (৪৭), ভুইট্টাপাড়ার তরচ্যাং ¤্রাে (৩২), সদর ইউনিয়নের দাঁতভাঙা পাড়ার ছায়ারানি তঞ্চঙ্গ্যা (৪৫), বোধানর পাড়ার সন্ধ্যাবালা শীল (৫২), একই পাড়ার বর্ষা শীল বুলু (১৭), লামা উপজেলার ফাঁসিয়া খালী ইউনিয়নের কুমারী বাজার পাড়ার করিমা আক্তার (৩৬) ।
আর পানিতে ডুবে মারা যায় লামা উপজেলার রুপসীপাড়ার বাসন্দিা মংবাসিং মার্মা (২৮), আলীকদম উপজেলার জামতলী ১৫নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মো. মুছা (২২) এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঠাকুর পাড়ার পানিতে ভেসে গিয়ে ফংচা মার্মা (৬৫) ।
জেলা প্রশাসনের আরো তথ্য মতে বান্দরবান পার্বত্য জেলার বিভিন্ন এলাকায় মোট ৬০০টি পরিবার পানিবন্দী ছিল। আর পাহাড়ধসে প্রায় ৩ হাজার ৫৭৮টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ২ হাজার ৪০ জন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরতদের রান্নাকরা খাবারসহ শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও খাবার পানিও বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
এদিকে আজও সকাল থেকে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে বান্দরবান জেলায়। গত ৬ আগস্ট থেকে ভারী বর্ষণে বান্দরবান পার্বত্য জেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়। জেলা উপজেলার হাজারো মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় থেকে মানবেতর জীবন যাপন করে। ডুবে যায় বান্দরবানের সড়ক, বন্ধ হয়ে যায় সড়ক যোগাযোগ। জেলা প্রশাসকে কার্যালয়, সদর উপজেলা কার্যালয়, ফায়ার সার্ভিস, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিশিয়াল কার্যালয়, মেম্বার পাড়া, আর্মি পাড়া, হাফেজ ঘোনা, ইসলামপুর, কালাঘাটা, বালাঘাটাসহ শহরের প্রায় ৮০শতাংশ বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ে। এছাড়াও বিদ্যুৎ সরবরাহ, সড়ক যোগাযোগ, মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায় জেলায় । সারাদেশ থেকে টানা চারদিন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পার্বত্য এই জেলা।
এদিকে আজ দুপুরে রেডক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং সাইক্লোন সেন্টারে ২০০ পরিবারকে শুষ্ক খাবার বিতরণ করেন।