বাসস
  ১৮ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৩৩

ফেনীতে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে কৃষকদের সফলতা

॥ আরিফ রিজভী ॥
ফেনী, ১৮ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস): জেলায় বেগুনগাছে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে অসময়ের গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে সফল হয়েছেন দাগনভূঞা পৌর এলাকার আলাইয়ারপুর গ্রামের কৃষক মো. ইসমাইল হোসেনসহ উপজেলায় একাধিক কৃষক।
উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় পরীক্ষামূলকভাবে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষে সফলতা পেয়েছেন কৃষক।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, রাজস্ব খাতের অর্থায়নে প্রদর্শনী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপজেলার পৌর এলাকার আলাইয়ারপুর গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন ৫ শতক, উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের খুশিপুর গ্রামে কৃষক মো. মোস্তফা ৫ শতক, চাঁনপুর গ্রামের কৃষক মো. মোতালেব ৫ শতক, জগতপুর গ্রামের কৃষক মো. ছায়েদুল হক ৫ শতক, রামানন্দপুর গ্রামের কৃষক মো. ফারুক ৫ শতক জমিতে বারি হাইব্রিড ৮ জাতের টমেটো চাষ করেছেন এই গ্রাফটিং ও মালচিং পদ্ধতিতে।
সরেজমিনে পৌর এলাকার কৃষক ইসমাইলের টমেটোর জমিতে গিয়ে দেখা গেছে, থোকায় থোকায় কাঁচা-পাকা টমেটো ঝুলছে। ইতিমধ্যে ১৮০ টাকা কেজি ধরে প্রায় ৩৫ কেজি টমেটো বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছেন কৃষক ইসমাইল।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদনে ও পোকা দমনের জন্য কীটনাশকের প্রয়োগ কমিয়ে 'সেক্স ফেরোমন ফাঁদ’ ব্যবহার করছে কৃষকরা। এতে কীটনাশক ক্রয়ের খরচ সাশ্রয় হচ্ছে এবং বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন হচ্ছে।
কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে ৫ শতক জমিতে গ্রাফটিং করেছি। ফলনও পর্যাপ্ত, দামও পাচ্ছি। আগামীতে আরও বেশি জমিতে টমেটো আবাদে পরিকল্পনা করছি।
গ্রাফটিং পদ্ধতিতে বছরের এ সময়ে টমেটো চাষ দেখতে আসছেন স্থানীয় কৃষকরা। অসময়ে টমেটো হওয়ায় বাজারে চাহিদাও বেশ। অনেক কৃষক ইতোমধ্যে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করতে আগ্রহী হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসমাইল।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, বেগুন চারার গোড়ার দিকের অংশের সঙ্গে টমেটোর চারার ওপরের দিকের অংশ জোড়া দিয়ে করা হয় গ্রাফটিং। এভাবে লাগানো টমেটোর চারা বড় হয়ে ঢলে পড়ে না, রোগ বালাইও তেমন হয় না। উপরন্তু ফলন মেলে প্রচুর। সাধারণত একটি গাছে ২ থেকে ৩ কেজি টমেটো পাওয়া যায়। কিন্তু গ্রাফটিং পদ্ধতিতে চাষ করা প্রতিটি গাছে মেলে ১৫ থেকে ২০ কেজি টমেটো। গ্রাফটিং করা টমেটো গাছ পানি সহনীয়। ফলে ভারি বৃষ্টিতেও এই টমেটো গাছ নষ্ট হয় না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মহিউদ্দিন মজুমদার বলেন, গ্রীষ্মকালীন টমেটোর সবচেয়ে মারাত্মক রোগ হলো ঢলেপড়া রোগ। এটি একটি ব্যাক্টেরিয়া জনিত রোগ, এই রোগের আক্রমণ হলে গাছ দ্রুত মারা যায়। এর থেকে উত্তরণের জন্য গ্রাফটিং টমেটোর চারা ব্যবহার করা হয়, আমরা কৃষকদের এই চারা বিনামূল্যে বিতরণ করেছি। ইতোমধ্যেই কৃষক উচ্চমূল্যে টমেটো বিক্রি করা শুরু করেছে এবং আশেপাশের কৃষক দেখে আগামী বছর এটি চাষাবাদ করার পরিকল্পনা করছে।