বাসস
  ২৪ আগস্ট ২০২৩, ১৮:৩৩

কেরানীগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুল্লাহ চৌধুরী হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত গোলজার গ্রেফতার

ঢাকা, ২৪ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস) : ঢাকার কেরানীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুল্লাহ চৌধুরী হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক প্রধান আসামী (সাবেক মেম্বার) গোলজার হোসেনকে (৫৮) গ্রেফতার করেছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ ।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে ঢাকার সূত্রাপুরের একটি বাসা তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ব্যাপারে  বিস্তারিত তথ্য জানাতে বৃহস্পতিবার  দুপুর সাড়ে ১২ টায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) মো. শাহাব উদ্দিন কবির জানান, বৃহস্পতিবার ভোররাতে ঢাকার সূত্রাপুর থেকে পুলিশের একটি  দল তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে  তাকে গ্রেফতার করে।
তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুল্লাহ চৌধুরীকে নৃশংসভাবে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলার প্রধান অভিযুক্ত  মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
তিনি আরও জানান,   ২০১৩ সালের  ১০ ডিসেম্বর  বিকেলে কেরানীগঞ্জ উপজেলার কোন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিক উল্লাহ চৌধুরীকে নৃশংসভাবে হত্যা পর মৃতদেহের পরিচয় গোপন করা জন্য গোলজারের নির্দেশে আসামীদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের পেট্রোল দিয়ে মৃত আতিক উল্লাহ চৌধুরীর দেহে ছিটিয়ে গুম করার উদ্দেশ্যে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর আতিক উল্লাহ চৌধুরীর ছেলে ফারুক চৌধুরী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে  দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দয়ের করেন।  মামলা তদন্ত শেষে পুলিশ  গোলজারসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করে।  পরে আদালত সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রমানে আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় ২০২০ সালের  ২ ডিসেম্বর  আসামী  গোলজার,তাজুল ইসলাম তানু,  জাহাঙ্গীর ওরফে জাহাঙ্গীর খাঁ, আহসানুল কবির ইমন,  রফিকুল ইসলাম আমিন ওরফে টুন্ডা আমিন,  শিহাব আহমেদ শিবু ও মো. আসিফকে আতিক উল্লাহ চৌধুরী হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেন।
এরআগে অন্যান্য আসামীরা গ্রেফতার হলেও মামলার প্রধান আসামী গোলজার, রফিকুল ইসলাম আমিন ওরফে টুন্ডা আমিন,  শিহাব আহমেদ শিবু, আত্মগোপন করেছিল।
তিনি জানান, সাবেক মেম্বার গোলজার হোসেন দীর্ঘদিন পলাতক থাকলেও নিজে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন না। মোবাইল ব্যবহার না করলেও তিনি দেশে আছেন এটা আমরা নিশ্চিত হয়ে তার ছেলে, মেয়ে  ও স্ত্রীর চলাচল  অনুসরণ করতে সোর্স ব্যবহার করি। কে কখন কোথায় যায় সেই গতিপথ অনুসরণ করি। পরে আমরা নিশ্চিত হই গোলজার হোসেন স্ত্রীকে নিয়ে সূত্রাপুর এলাকায় একটি বাসায় আছে।  পরে অভিযান চালিয়ে তাকে  গ্রেফতার করি। এ সময় তার সাথে স্ত্রী ও ছিল।
উল্লেখ্য, এ মামলায় এখনো দুই আসামী পলাতক রয়েছে। তারা হচ্ছে-
মো. রফিকুল ইসলাম আমিন ওরফে টুন্ডা আমিন ও  শিহাব আহমেদ শিবু। দন্ডপ্রাপ্ত বাকী দুই আসামীকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাসুদুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সরজিৎ কুমার ঘোষ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিকুল্লাহ চৌধুরী ছেলে বর্তমান কোন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান চৌধুরী ফারুক, এসআই নাজমুস সাকিব, হিরন কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।