শিরোনাম
টাঙ্গাইল, ২৫ আগস্ট,২০২৩(বাসস): কৃষির আধুনিকায়ণ ও যান্ত্রিককরণের পাশাপাশি বাড়ছে স্বল্প জীবনকালের ধান চাষ। চলতি আমন মৌসুমে অন্যান্য জাতের সাথে নতুন জাতের আমান ধানের চারা লাগাচ্ছে কৃষকরা। এক জমিতে অধিক ফসল চাষের জন্য তারা উচ্চ ফলনশীল জাতের চাষের দিকে ঝুঁকছে। ফলে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে স্বল্প জীবনকালের ধান চাষে। কৃষক ও কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, রোপা আমন ধান কাটার পর যাতে উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা করা যায়, সে লক্ষ্য নিয়েই ধান লাগানো হচ্ছে।
টাঙ্গাইলের মধুপুর ও ধনবাড়ি কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মধুপুর গড়ে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৭৭০ হেক্টর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ইতিমধ্যে ৮০ ভাগ ধান লাগানো শেষ। লক্ষ্যমাত্রার বাকিটাও এ সময়ে শেষ হবে। ধনবাড়িতে এ বছর আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৯ হাজার ৫শ' হেক্টর। অর্জন হয়েছে ৯ হাজার ৭শ' হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। এক জমিতে অধিক ফসল তথা আমান কাটার পর বোরো মৌসুমের আগে যাতে স্বল্প জীবনকালের সরিষা চাষ করা যায়, সেজন্য এ বছর নতুন নতুন জাতের স্বল্প জীবনকালের ব্রি ৭৫, ৮৭, ৯০, ৯৩, ৯৫, ১০৩, বিনা ১৫, বিনা ১৭ এবং অন্যান্য বিভিন্ন জাতের আমান ধান চাষ করা হচ্ছে।
সরিষা আবাদের মধ্যে অনেকেই আবার বাড়তি লাভের আশায় মৌমাছি পালন করে মৌ চাষ করে থাকে। ফলে বাড়তি আয় করার জন্য একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়। সরিষা আবাদে মৌচাষ করে মধু আহরণ করে থাকে। মধুপুর, ধনবাড়ি উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে আমনের শেষ সময়ে কৃষকরা চারা লাগতে ব্যস্ত সময় পার করছে। বেশির ভাগ জমিতে রোপা আমন ধানের চারা লাগানো শেষ পর্যায়ে। বাকিটা বলন লাগাচ্ছে। এর ফলে শেষ সময়ে বলন লাগালেও ধান আসবে একই সময়ে। এতে ফলনের কমতি হবে না, এমটাই জানালেন কৃষকরা।
কৃষক রিপন মিয়া (৪৩) জানান, দেড় মাস আগে তারা ধানের চারা আলাদা জমিতে লাগিয়ে রেখে ছিল। এখন সেই ধানের চারা বা বলন তোলে জমিতে লাগাচ্ছে। শেষ সময়ে লাগালেও ফলন কমে হবে না। ধানও অনেক পুষ্ট হয়, চিটা কম হয়। মুশুদ্দি গ্রামের আনছার আলী (৫০) জানান, তাদের এলাকায় স্বল্প জীবনকালের ধান চাষ করে। তারা এক জমিতে বছরে চারটি ফসল চাষ করে। আউশ, আমন, বোরোর পর সরিষা চাষ করেন। এতে কোন কোন ফসলের ফলন কম হয় না। বরং উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষের ফলে ফলন বেশি পান।
ধনবাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, ধনবাড়িতে এ বছর আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৯ হাজার ৫শ' হেক্টর। অর্জন হয়েছে ৯ হাজার ৭শ' হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল জানান, মধুপুরে এ বছর আমান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৭৭০ হেক্টর। ইতিমধ্যে ৮০ ভাগ লাগানো শেষ হয়েছে। বাকিটাও পূরণ হবে এমনটাই আশা তার। এক জমিতে অধিক ফসল তথা আমান কাটার পর বোরো মৌসুমের আগে যাতে স্বল্প জীবনকালের সরিষা চাষ করা যায়। সেজন্য এ বছর নতুন নতুন জাতের স্বল্প জীবনকালের ব্রি ৭৫, ব্রি ৮৭, ব্রি ৯০, ব্রি ৯৩ ব্রি ৯৫, ব্রি ১০৩, বিনা ১৫, বিনা ১৭ এবং অন্যান্য বিভিন্ন জাতের আমান ধান চাষ করা হচ্ছে।