শিরোনাম
॥ দিলরুবা ॥
মেহেরপুর, ৩১ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস) : মেহেরপুরে এবছর পুষ্টিকর লাল শাকের বাম্পার ফলন হয়েছে। দেখতে অনেকটা লাল কার্পেট মোড়ানো মাঠ।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, লাল শাক একটি সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় সবজি। আধুনিক পদ্ধতিতে লাল শাক চাষে সফলতা পাওয়াতে মেহেরপুরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লাল শাকের চাষ বেড়েছে। সদর উপজেলার ঝাউবাড়িয়া গ্রামের মাঠে দেখা যায় মাঠময় লাল শাকের চাষ। জমিতে লাল শাক শোভা বর্ধণও করছে। জমি থেকেই ভোক্তারা শাক কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
জানাগেছে,সদর উপজেলার ঝাউবাড়িয়া গ্রামের শাকচাষী বজলুর রহমান প্রতি বছরের জন্য ৩০ হাজার টাকা চুক্তিতে একবিঘা জমিতে লাল শাক চাষ করছেন। জমি প্রস্তুত, নিড়ানিসহ এ পর্যন্ত ৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত শাক বিক্রি করেছেন ৩৫ হাজার টাকার। এখনও ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার শাক বিক্রি হবে।
বজলুর রহমান জানান, লাল শাক তিনমাসেরই খাওয়ার উপযোগি হয়। বাজারে যতই শাকের দাম কম হোক ৩০ হাজার টাকা লাভবান হওয়া যায়। ঝাউবাড়িযা গ্রামের অনেকেই লাল শাক চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। গ্রামের পশ্চিম মাঠ এলাকার উঁচু মাঠ। ওই এলাকার লাল শাকের জমিগুলো দেখলে মনে হয় লাল কার্পেট বিছানো রয়েছে।
চাষি নজরুল ইসলাম বলেন, আগে শুধুমাত্র ধান চাষ করতাম। তবে এবার লাল শাকের চাষ শুরু করেছি। শুরুতে ২৪ শতক জমিতে লাল শাকের চাষ করলেও এখন ৪৮ শতক জমিতে চাষ করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা। এছাড়াও বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে ৫০ থেকে ৫২ হাজার টাকার।
তিনি আরও বলেন, লাল শাকের পাশাপাশি আমি অন্য জমিতে ধনিয়া, মুলা, ঢেঁড়স এবং ধান চাষ করেছি। লাল শাকের বীজ নিজেই উৎপাদন করি। এতে শাক উৎপাদনে যেমন সময় কম লাগে তেমন লাভও বেশি হয়।
লাল শাকচাষী আমিরুল ইসলাম জানান, তিনি একবিঘা জমিতে লাল শাকের বীজ বপন করেছেন। এতে তিনি ৫০ হাজার টাকা লাভবান হবেন বলে আশা করছেন। একবিঘা জমিতে লাল শাক আবাদে খরচ হয় মাত্র ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। বীজ বপনের ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে শাক বাজারজাত করা যায়।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার জানান, লাল শাক ও বীজ উৎপাদন বদলে দিয়েছে গ্রামীণ অর্থনীতির চিত্র। গ্রামের চাষিরা এখন এই শাক ও বীজ উৎপাদনে অনেক বেশি অভিজ্ঞ।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে প্রায় ৮শ’ হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের লাল শাকের আবাদ করেছেন চাষিরা। পরে এসব শাক থেকেই বীজ উৎপাদন করবেন তারা।