বাসস
  ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩:১২
আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৬:১৭

আজ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (বাসস): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বহুল প্রতীক্ষিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশের যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন করবেন।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এএইচএমএস আক্তার আজ বাসস’কে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেল সাড়ে ৩ টায় শেরেবাংলা নগরের পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এক্সপ্রেসওয়েটির উদ্বোধন করবেন।’
উদ্বোধনের পরের দিন বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, এই অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। বোর্ডিংয়ের জন্য ১৫টি র‌্যাম্প রয়েছে। এর মধ্যে বনানী ও মহাখালীতে দু’টি র‌্যাম্প আপাতত বন্ধ থাকবে। এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা হবে ঘন্টায় ৬০ কিমি।
থ্রি হুইলার, সাইকেল এবং পথচারীদের এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করতে দেওয়া হবে না। মোটরবাইক এখনই চলতে পারবে না।
এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশের টোল রেট ৮০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা নির্ধারণ করে।
ক্যাটাগরি ১-এর অধীনে যে কোনো স্থান থেকে বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশ অতিক্রম করার জন্য গাড়ি, ট্যাক্সি, জীপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকল, মাইক্রোবাস (১৬ আসনের নিচে) এবং হালকা ট্রাক (৩ টনের নিচে) টোল রেট ৮০ টাকা।
মাঝারি ট্রাকের জন্য (ছয় চাকা পর্যন্ত) যে কোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য টোল রেট ক্যাটাগরি-২ এর অধীনে ৩২০ টাকা।
ক্যাটাগরি ৩-এর অধীনে যে কোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য ট্রাকের (ছয় চাকার বেশি) টোল রেট ৪০০ টাকা। যে কোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য যে কোনো বাসের (১৬ সীটের বা তার বেশি) টোল রেট ৪-ক্যাটাগরির অধীনে ১৬০ টাকা।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাওলা, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
প্রাথমিকভাবে এক্সপ্রেসওয়েতে গতিসীমা হবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার এবং এইচএসআইএ থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে যানবাহনের সময় লাগবে ১০ মিনিট।
১১.৫ কিমি মেইনলাইন এবং ১১ কিমি র‌্যাম্পসহ, অংশটির দৈর্ঘ্য হবে ২২.৫ কিমি। প্রাথমিকভাবে এই অংশের ১৫টির মধ্যে ১৩টি র‌্যাম্প খোলা হবে। বনানী ও মহাখালীর র‌্যাম্প নির্মাণ শেষ হলেই খুলে দেওয়া হবে।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮,৯৪০ কোটি টাকা, এতে ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ডিং (ভিজিএফ) তহবিল ২,৪১৩ কোটি টাকা, যা বাংলাদেশ সরকার প্রদান করবে।
ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড বিনিয়োগকারী কোম্পানি। এতে ইতালীয় থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার রয়েছে ৫১ শতাংশ, চায়না শানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপের (সিএসআই) শেয়ার ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেডের ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
প্রকল্প অনুযায়ী, প্রথম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৯ জানুয়ারি ২০১১ এবং পর্যালোচনা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩ এবং প্রকল্প সমাপ্তির সময়কাল ছিল জুলাই ২০১১ থেকে জুন ২০২৪।
বনানী রেলওয়ে স্টেশন থেকে মগবাজার রেলক্রসিং পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপের নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে বেশ কিছু অবকাঠামো প্রকল্প শুরু হয়েছে। আকার, বাজেট এবং অর্থনৈতিক প্রভাব বিবেচনা করে এই প্রকল্পগুলোর অনেকগুলোকে মেগা-প্রকল্প বলা হয়েছে।
সরকার তাদের কয়েকটিকে ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে পদ্মা বহুমুখী সেতু, বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্প এমআরটি লাইন-৬ এবং চন্দ্রা-এলেঙ্গা চার লেন মহাসড়ক সম্পন্ন হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এবং দীর্ঘতম আন্ডারওয়াটার রোড টানেল, শীঘ্রই যান চলাচলের জন্য খৃুলে দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রকল্প-পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল সংযোগ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়ি ১২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেলওয়ে সেতু। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং তাই সরকারের মূল ফোকাস এখন তাদের সময় মতো সম্পন্ন করা।
আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর দেশের যোগাযোগ, পরিবহন ও বিদ্যুৎ অবকাঠামোর রূপান্তরের লক্ষে বেশ কিছু স্মারক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা ঢাকা মেট্রোরেল আংশিক চালু করেছে এবং পদ্মা বহুমুখী সেতুসহ অন্যান্য মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন করেছে।