বাসস
  ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:৩১

নাবিকরা সমুদ্র পথে পণ্যের নির্বিঘ্ন সরবরাহ নিশ্চিত করে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, নাবিকরা আমাদের নৌ বাণিজ্যের প্রাণ শক্তি। তারা সমুদ্র পথে সারা বিশ্বে পণ্যের নির্বিঘœ সরবরাহ নিশ্চিত করে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি ঘটায়।  
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে সমুদ্র খাতের ভিত্তি রচনা করেছিলেন এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শিল্পের স্টেকহোল্ডার হিসাবে সামনের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগগুলির মোকাবেলায় নাবিকদের আরও দক্ষ হতে হবে। আর তাদের তৈরি করা আমাদের দায়িত্ব।’
প্রতিমন্ত্রী আজ সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ মেরিন কমিউনিটি, সিঙ্গাপুর (বিএমসিএস) আয়োজিত ‘নেভিগেটিং সিফেয়ারার শর্টেজ-বাংলাদেশে'স প্রসপেক্ট ইন মেরিটাইম এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই সেমিনার বাংলাদেশী নাবিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো এবং মেরিটাইম শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান বাড়াতে সহায়তা করবে।
সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম, ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম এমপ্লয়ার্স কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন বেলাল আহমেদ। অনলাইনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেরিন একাডেমী চট্টগ্রাম এর কমান্ডেন্ট ড. সাজিদ হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মেরিন কমিউনিটি, সিঙ্গাপুর এর প্রেসিডেন্ট সারোয়ার দিতো। সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
সেমিনারে সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন জাহাজের মালিক, জাহাজের ব্যবস্থাপক, মেরিন ক্যাডেট ও নাবিক নিয়োগকারী বাংলাদেশী বিভিন্ন এজেন্সি, ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সাইন্স এন্ড টেকনোলজি, সিঙ্গাপুর মেরিটাইম অফিসার্স ইউনিয়ন, সিঙ্গাপুর শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন মেরিন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।  
সেমিনারে বাংলাদেশের মেরিটাইম শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সম্ভাবনা, জাহাজে অধিক সংখ্যক বাংলাদেশের মেরিনার নিয়োগ ও নতুন কর্মক্ষেত্র বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা হয়।
বাংলাদেশী নাবিকদের প্রয়োজনীয় চাহিদা লক্ষ্য রেখে এধরনের সেমিনারে আয়োজন করায় প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ মেরিন কমিউনিটি সিঙ্গাপুর (বিএমসিএস)কে ধন্যবাদ জানান।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। এ টেকসই উন্নয়নে নৌ ও নৌপরিবহন একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে স্বীকৃত। জাতীয় পতাকাবাহী জাহাজের জন্য বাংলাদেশী নাবিকের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই নাবিকরা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। বর্তমানে আমাদের অর্থনীতির জন্য বছরে প্রায় ৪শ’ মিলিয়ন ডলার উপার্জন করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি এক বিলিয়ন  ডলারে উন্নীত করা আমাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ‘নৌ খাতে লিঙ্গ সমতা উন্নীত করার জন্য আমরা ২০১২ সালে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে মহিলা ক্যাডেটদের অন্তর্ভুক্তি শুরু করেছিলাম। আমাদের সরকার আন্তর্জাতিক কনভেনশন-যেমন স্ট্যান্ডার্ড ট্রেনিং সার্টিফিকেশন অ্যান্ড ওয়াচকিপিং (এসটিপিডব্লিউ) কনভেনশন এবং এমএলসি ২০০৬, মেনে চলছে।  দক্ষ নাবিকদের ক্রমবর্ধমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাহিদা মেটাতে আমরা চারটি নতুন মেরিন একাডেমি এবং একটি নাবিক ক্রু প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা বিশ্বের নবম মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটিও প্রতিষ্ঠা করেছি।’
আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানিতে এমনকি জাতিসংঘের সংস্থাগুলোতেও গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত বাংলাদেশী মেরিনাররা বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে এ কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘স্বায়ত্বশাসিত জাহাজ এবং শূন্য-কার্বন জ্বালানী প্রবর্তনের মাধ্যমে সামুদ্রিক শিল্প দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। আমরা মেরিন একাডেমিতে ই-লার্নিং-ভিত্তিক মেরিটাইম এডুকেশন এবং সিমুলেটর-ভিত্তিক প্রশিক্ষণ চালু করার মাধ্যমে এই প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে চলছি। এই প্রযুক্তিগত একীকরণ আমাদের সেক্টরে দক্ষতা এবং প্রতিযোগিতা বাড়াবে। ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার 'স্মার্ট বাংলাদেশ'-এর স্বপ্নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের দেশের সামুদ্রিক শিক্ষাকে একবিংশ শতাব্দীতে নিয়ে যেতে আমরা প্রতিশ্রুতবদ্ধ।’