শিরোনাম
সংসদ ভবন, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : দেশে ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধ, অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারে জরিমানা, লাইসেন্স ব্যতীত কসমেটিকস উৎপাদন, বিতরণ, আমদানি-রপ্তানিতে জেল-জরিমানার বিধান রেখে ওষুধ ও কসমেটিকস্ বিল, ২০২৩ আজ সংসদে পাস হয়েছে।
ড্রাগস এ্যাক্ট, ১৯৪০ এবং ড্রাগস (কন্ট্রোল) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ একীভূত করে অন্যান্য দেশের ওষুধ আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুসরণ করে বাংলায় যুগোপযোগী ‘ওষুধ ও কসমেটিকস্ আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। নতুন এই আইনে প্রসাধনী পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর পরিবর্তে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে (ডিজিডিএ) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক জাতীয় সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন এবং স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কণ্ঠভোটে এটি পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো নকল ওষুধ উৎপাদন করলে বা জ্ঞাতসারে কোনা নকল ওষুধ বিক্রয়, মজুত, বিতরণ বা বিক্রয়ের উদ্দেশে প্রদর্শণ করলে ও ওষুধ ভেজাল করলে বা ভেজাল ওষুধ উৎপাদন, বিক্রয়, মজুত এবং অসৎ উদ্দেশে ওষুধের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অধিক মুনাফার অভিপ্রায়ে ওষুধ মজুত করা হলে যাবজ্জীবন কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১৪ বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
নতুন এই আইনে নিবন্ধন ব্যতীত ওষুধ উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি, বিক্রয়, বিতরণ, মজুত অথবা প্রদর্শন করা হলে, লাইসেন্স ব্যতীত বা লাইসেন্সে আরোপিত শর্ত বহির্ভূতভাবে ওষুধ উৎপাদন করা হলে, মিসব্র্যান্ডের ওষুধ উৎপাদন, বিক্রয়, মজুত, বিতরণ করলে, সরকারি ওষুধ বিক্রয় অথবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মজুত বা প্রদর্শন করলে, লাইসেন্স ব্যতীত বা লাইসেন্সে আরোপিত শর্ত বহির্ভূতভাবে ওষুধ আমদানি করলে সেক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব ১০ বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
আদর্শ মানের নয় এমন কোনো নি¤œমানের ওষুধ উৎপাদন, বিক্রয়, মজুত, বিতরণ বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রদর্শন বা আমদানি করা হলে অনূর্ধ্ব ৭ বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধিত চিকিৎসক বা ওই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান ব্যতিত ইনজেকশন দ্বারা বা অন্য কোনোভাবে ফিলার বোটক্স গ্লুটাথিয়ন বা এ ধরনের কোনো কসমেটিকস্ প্রয়োগ করা হলে অনূর্ধ্ব ৬ বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা অনধিক ৩ লাখ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
এই আইনে লাইসেন্স ব্যতীত অথবা লাইসেন্সে আরোপিত শর্ত বহির্ভূতভাবে ঔষধ বিক্রয়, মজুত, বিতরণ বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রদর্শনের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট অথবা ওয়ববেইজড প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হলে, লাইসেন্স ব্যতীত অথবা লাইসেন্সে আরোপিত শর্ত বহির্ভূতভাবে ঔষধ বিক্রয়, মজুত, বিতরণ বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রদর্শন করা হলে ও কোনো নকল কসমেটিকস্ উৎপাদন করলে বা জ্ঞাতসারে কোনো নকল কসমেটিকস বিক্রয়, মজুত, বিতরণ বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রদর্শন করা হলে অনূর্ধ্ব ৫ বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা অনধিক ৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
বিউটি পার্লার কর্তৃক বিধি লংঘন করে কোনো কসমেটিকস্ প্রয়োগ ও ব্যবহার করলে অনূর্ধ্ব ৩ বৎসরের কারাদন্ড অথবা অনধিক ১ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
নির্ধারিত বিক্রয় মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে কোনো ঔষধ বা ঔষধ তৈরির কাঁচামাল বিক্রয় করা হলে অনূর্ধ্ব ২ বৎসরের কারাদন্ড অথবা অনধিক ২ লাখ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডের বিধান করা হয়েছে।
লাইসেন্স ব্যতীত অথবা লাইসেন্সে আরোপিত শর্ত বহির্ভূতভাবে কসমেটিকস্ উৎপাদন, বিতরণ, আমদানি বা রপ্তানি করা হলে এবং মিসব্র্যান্ডের কসমেটিকস্ উৎপাদন, বিক্রয়, মজুত, বিতরণ করলে অনূর্ধ্ব ১ বৎসরের কারাদন্ড অথবা অনধিক ১ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
বিল পাসের প্রক্রিয়ায় আলোচনায় অংশ নেন সরকারি দলের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, বিরোধী দলীয় সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী, ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান, বেগম রওশন আরা মান্নান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি এবং গণফোরামের সদস্য মোকাব্বির খান।