বাসস
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩:০২

শারদীয় দুর্গাপূজা : গোপালগঞ্জে ১২৮০ মন্ডপে ব্যস্ত এখন প্রতিমা শিল্পীরা

// মনোজ কুমার সাহা //
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা আসন্ন। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জের মন্দিরগুলোতে শুরু হয়েছে প্রতিমা তৈরীর কাজ।তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, গোপালগঞ্জ জেলা শাখা সূত্রে জানাগেছে, এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় ১ হাজার ২৮০টি মন্দিরে পূজার প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সদর উপজেলায় ৩৪০টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া কোটালীপাড়া উপজেলায় ৩১৫টি, মুকসুদপুর উপজেলায় ২৯৮টি, কাশিয়ানী উপজেলায় ২৩৩টি এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৯৪টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে । এ বছর ১৪ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দেবীপক্ষ।২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠীতে দেবী বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা।আগামী ২৪ অক্টোবর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব সমাপ্ত হবে।
জেলার বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখে ও জানা গেছে, গোপালগঞ্জের সকল মন্দিরগুলোতে শুরু হয়েছে প্রতিমা তৈরীর কাজ। প্রতিমা শিল্পীরা প্রতিমা তৈরীর কাজে গভীর মনোনিবেশ করেছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তারা দেবী মূর্তি তৈরী করছেন। ইতিমধ্যে মন্দিরগুলোর কাঠামে খড় ও মাটি দিয়ে পরম যত্নে প্রতিমা শিল্পীরা গড়ছেন প্রতিমা।
প্রতিমা শিল্পী অমিতোষ পাল বলেন, প্রতিমা তৈরী করছি মন্দিরে-মন্দিরে। এরপর দো-আঁশ মাটির কাজ করা হবে। আর এসব প্রতিমা তৈরীতে আমাদের দম ফেলার ফুসরত নেই। দেবী মা দুর্গা তার সাথে বিদ্যার দেবী স্বরসতী, ধন সম্পদের দেবী লক্ষ্মী এবং দেব সেনাপতি কার্তিক ও গনেশসহ নানা দেব-দেবীর প্রতিমার রূপকে ফুটিয়ে তুলবো নিপুন হাতের ছোঁয়ায়।  
প্রতিমা শিল্পী অমিতোষ আরো বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে চাহিদার তুলায় মজুরি কম পেলেও বাপ দাদার আদি পেশা টিকিয়ে রেখেছি।
প্রতিমা শিল্পী টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সরজিত সেন, গোপালগঞ্জ সদরের রূপাহাতি গ্রামের সজীব মন্ডল, সৌমিত্র বিশ্বাস জানান, এবছর আমি ১০টি করে প্রতিমা তৈরি করবো। তাই পূঁজা শুরুর দিন পর্যন্ত রঙ এর কাজ করতে হবে। তবে চাহিদার তুলায় আমরা মজুরি কম পাচ্ছি। সেই সাথে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির এ বাজারে পরিশ্রমের পর প্রতিমা তৈরি করে যে মজুরি পাই তা দিয়ে জীবন যাপন করা কষ্টকর হয়ে পড়ছে। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে চলে গেছে। নানা সংকটের মধ্যেও বাপ দাদার আদি পেশা টিকিয়ে রেখেছি।
এদিকে, এ বছর জাঁকজমকভাবে দুর্গাপূজা আয়োজন থাকবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
গোপালগঞ্জ জেলা শহরের পুরাতন বাজার রোড সর্বজনীন দূর্গা মন্দিরের পূজার আয়োজক দিলীপ কুমার সাহা দিপু ও শ্রী শ্রী গনেশ পাগল সেবাশ্রমের দুর্গাপূজার আয়োজক সুজয় বিশ্বাস জানান, এ বছর জাঁকজমকপূর্ণভাবেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ জেলা গোপালগঞ্জে পূঁজা আয়োজন করা হবে। সেই লক্ষ্যেই কাজ প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দেবী দূর্গার সাথে লক্ষী, গনেশ, কার্তিক ও সরস্বতীর পাশাপাশি রামায়ন, মহাভারতের পৌরাণিক দৃশ্যপট ফুঁটিয়ে তুলে আমাদের মন্দিরগুলো আকর্ষনীয় ও সৌন্দর্য মন্ডিত করে তেলো হচ্ছে। এতে মন্দিরে দর্শনার্থী সমাগম বেশি হবে। সবাই পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারব।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ডা. অসিত কুমার মল্লিক জানান, এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় ১ হাজার ২৮০টি মন্দিরে পূজার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩৪০টি, কোটালীপাড়া উপজেলায় ৩১৫টি, মুকসুদপুর উপজেলায় ২৯৮টি, কাশিয়ানী উপজেলায় ২৩৩টি এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৯৪টি মন্দিরে মূর্তি তৈরীর কাজ চলছে। শেষ পর্যন্ত এ জেলায় পূজার সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।