বাসস
  ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:২৫

লক্ষ্মীপুরে শিশু হত্যার দায়ে ‘সৎ’ মায়ের ১০ বছরের কারাদন্ড

লক্ষ্মীপুর, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ (বাসস) : জেলার রামগঞ্জ উপজেলায় শিশু আহমেদ (০৩) হত্যা মামলায় আজ শিশুটির ‘সৎমা’ (পিতার দ্বিতীয় স্ত্রী) কোহিনুর বেগমকে (২৫) দশবছরের কারাদ- ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও একবছরের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। 
আজ সোমবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। 
দন্ডপ্রাপ্ত কোহিনুর বেগম জেলার রামগঞ্জ উপজেলার দরবেশপুর ইউনিয়নের উত্তর দরবেশপুর গ্রামের মোবারক হোসেন কুট্টির মেয়ে এবং চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রায়চৌ গ্রামের হাবিব মিয়ার ছেলে মিরনের দ্বিতীয় স্ত্রী। 
লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) এডভোকেট জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার আদালত সূত্রে জানা যায়, হত্যার শিকার শিশু আহমেদের পিতা মিরন ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে চাকরিরত। পরিবারিক কলহের জের ধরে প্রথম স্ত্রী শারমিন আক্তারের সঙ্গে মিরনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। আহমেদ তার প্রথম সংসারের ছেলে। কিছুদিন পর মিরন লক্ষ্মীপুর জেলার  রামগঞ্জের কোহিনুর বেগমকে বিয়ে করে। শিশু আহমেদসহ দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে তিনি নিজ এলাকা চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। ২০২২ সালের ২২ জুলাই দ্বিতীয় স্ত্রী ও প্রথমপক্ষের সন্তান আহমেদকে  রেখে তিনি ঢাকায় কর্মস্থলে চলে যান। ১০ আগস্ট শিশু আহমেদকে নিয়ে কোহিনুর রামগঞ্জের দরবেশপুরে তার বাবার বাড়িতে যায়। সেখান থেকে ২৭ আগস্ট কহিনুর তার স্বামীর বাসায় আসে। এরপর স্বামী মিরনকে সে জানায়, শিশু  আহমেদকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একইদিন মিরন ঢাকা থেকে গিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ছেলেকে পাননি। এ ঘটনায় ২৮ আগস্ট হাজীগঞ্জ থানা পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করা হয়। পরদিন হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ কোহিনুরকে  জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে শিশু আহমেদকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে। 
জিজ্ঞাসাবাদে আসামি কোহিনুর বেগম স্বীকার করে ২০২২ সালের ২৬ আগস্ট দিবাগত রাত ২ টার দিকে পেটে লাথি দিলে শিশু আহমেদ মারা যায়। পরে দা দিয়ে খাটের নিচে গর্ত করে তার মরদেহ মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। পরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থানার পুলিশের সহযোগীতায় ২৯ আগস্ট বিকেলে দরবেশপুরে কহিনুরের বাবার বাড়ির শয়নকক্ষের খাটের নিচে পুঁতে রাখা আহমেদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। একইদিন স্বামী মিরন বাদী হয়ে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। 
একই বছর ৩০ অক্টোবর রামগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস আদালতে আসামি কোহিনুরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ রায় প্রদান করেন। রায়ে আদালত কোহিনুর বেগমকে দশবছরের কারাদ- ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও একবছরের কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন।