বাসস
  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:১৮
আপডেট  : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৬:০৫

গোপালগঞ্জে মানবিক সহায়তার চাল পাচ্ছে ১০০২ জেলে পরিবার

 // মনোজ কুমার সাহা //
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : গোপালগঞ্জে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণে বিরত থাকা ১০০২ জেলে পরিবারের মধ্যে মানবিক সহায়তার ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হবে। জেলে পরিবার প্রতি ২৫ কেজি করে চাল বিনামূল্যে বিতরণ করবে জেলা প্রশাসন।
এ তথ্য জানিয়েছেন মৎস্য অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজন কুমার নন্দী।
ওই কর্মকর্তা বলেন, গোপালগঞ্জর জেলার সদর উপজেলা, টুঙ্গিপাড়া ও কাশিয়ানী উপজেলার মধ্য দিয়ে মধুমতি নদী প্রবাহিত হয়েছে। এ নদীতে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। মধুমতি নদীর মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে এ নদী থেকে ইলিশ আহরণ, বিপনন, পরিবহন নিষিদ্ধ থাকবে। ইলিশ আহরণে বিরত থাকা ১০০২ জেলে পরিবারের মধ্যে মানবিক খাদ্য সহায়তার চাল প্রদান করা হবে।
এ কর্মসূচির আওতায় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৪৭০, টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৩০০ ও কাশিয়ানী উপজেলায় ২৩২ পরিবার ২৫ কেজি করে ভিজিএফ চাল পাবে। ইতিমধ্যে জেলে পরিবারের তালিকা প্রনয়ণ করা হয়েছে। আমরা এ তালিকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রেরণ করব। জেলে পরিবার গুলোর মধ্যে বিতরণের জন্য ২৫ টন ৫০ কেজি চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। গোপালগঞ্জে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণে বিরত ও মা মাছ সংরক্ষণ করে জেলায় ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে। এতে জেলে পরিবার ও জেলাবাসী উপকৃত হবেন।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, গোপালগঞ্জে মা ইলিশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যদের নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে সভা করেছি। আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মধুমতি নদী থেকে ইলিশ আহরণ, বিপনন, পরিবহন নিষিদ্ধ থাকবে। এটি সফল করতে আমরা সচেতনতা সভা, প্রচার প্রচারণা, ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টারিং করব বলে ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ওই সময়ে টাস্কফোর্স বাজার তদারকি, নদীতে অভিযানসহ মা ইলিশ সংরক্ষণের ব্যাপারে সরকার ঘোষিত অন্যান্য কর্মসূচি প্রতিপালন করবে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী ইউনিয়নের লেবুতলা গ্রামের জেলে সন্তোষ বিশ্বাস(৫৫) বলেন, সরকার বিগত কয়েক বছর ধরে  প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা বন্ধ করেছে। এতে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা উপকৃত হচ্ছি। ইলিশ আহরণে বিরত থাকায় সরকার আমাদের চাল দিয়ে সহযোগিতা করছে। এ সময় আমরা জাল মেরামত ও অন্যন্য কাজ করে টাকা রোজগার করে সংসার চালাই। এই ২০ দিন একটু কষ্টের মধ্যে চললেও দেশে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। আমাদের সবার সমৃদ্ধি আসে।
গোপালগঞ্জ শহরের ইলিশ ব্যবসায়ী প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, আহরণ বন্ধ ও জেলে পরিবারগুলোকে সরকার সহায়তা করায় দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। ইলিশের মতো অন্যান্য প্রাকৃতিক  মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রজনন মৌসুম চিহ্নিত করে মৎস্য আহরণ বন্ধ রখতে হবে। চায়না জাল, কারেন্ট জাল, ইলেকট্রিক ডিভাইস দিয়ে মাছ শিকার চিরতরে বন্ধ করতে হবে। তাহলে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে।