শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট সাংবাদিক হেলাল উদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৩৩ মিনিটে তিনি কক্সবাজারের সদর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি ‘দৈনিক যায় যায় দিনের’ চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান ছিলেন।
প্রবীণ এই সাংবাদিকের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, একজন নির্লোভ, সৎ ও সাহসী সাংবাদিক ছিলেন হেলাল উদ্দিন চৌধুরী। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আপোষহীন কণ্ঠ এই কলম সৈনিক সমাজে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দিতে আমৃত্যু অবদান রেখে গেছেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল শোক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রথিতযশা সাংবাদিক হেলাল উদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের নতুন ভবন নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ভবন নির্মাণে মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাথে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দের চুক্তি স্বাক্ষর মূলত তিনি ও তৎকালীন সভাপতি আবু সুফিয়ানের প্রচেষ্টায় হয়েছে। প্রগতিশীল সাংবাদিক হেলাল চৌধুরী স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ চট্টগ্রামের বহু গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন।
তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
কক্সাবাজার প্রেস ক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আবু তাহের জানান, যায়যায় দিনের প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য হেলাল কক্সবাজার গিয়েছিলেন। শুক্রবার সকালে হোটেলে নাস্তাশেষে বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। কিছুক্ষণ হোটেলে অবস্থান করে তিনি সদর হাসপাতালে আসেন বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে। এখানে প্রাথমিক চেকআপের পর ডাক্তাররা তাকে ভর্তি হওয়ার অনুরোধ জানান। এরপর অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে আইসিইউ’তে স্থানান্তর করা হয়। সন্ধ্যায় তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
মৃত্যুর আগে সাংবাদিক হেলাল উদ্দিন চৌধুরী যায়যায় দিন পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি কক্সবাজার সদরের টেকপাড়ার মরহুম জাকির হোসেন ও মরহুমা ফরিদা বেগমের ৩ সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ। তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।
তিনি স্ত্রী, এক পুত্রসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হেলাল উদ্দিন চৌধুরীর সাংবাদিকতা শুরু কক্সবাজারে, দৈনিক আজাদী’র জেলা প্রতিনিধি হিসেবে। ১৯৮৩ সালে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে দৈনিক আজাদী’তে যোগদান করলে তিনি চট্টগ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তিনি ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দৈনিক আজাদী’তে স্টাফ রিপোর্টার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ও চিফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর তিনি দৈনিক সমকাল’র চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হিসেবে যোগ দেন। পরে দৈনিক যায়যায় দিন-এ ব্যুরো প্রধান হিসেবে দীর্ঘ সময় কর্মরত ছিলেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের সম্মিলিত পেশাজীবী সংগ্রাম পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।
এদিকে, সাংবাদিক হেলাল উদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মেয়র, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। মেয়র তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম এবং চট্টগ্রামের প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা ও সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক পৃথক শোক বিবৃতিতে সৎ ও নিষ্ঠাবান সাংবাদিক হেলাল উদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যু চট্টগ্রাম তথা সারাদেশের সাংবাদিক সমাজের অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিবৃতি দিয়েছেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার, চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম মন্টু, সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী, মহানগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সরফরাজ খান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম চৌধুরী ও নারী বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সাইফুন নাহার খুশী।