বাসস
  ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৬:২০

লক্ষ্মীপুরে জোড়া খুনের দায়ে আমৃত্যু কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

লক্ষ্মীপুর, ৩ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস) : জেলার রামগতিতে প্রেমিক ইউসুফসহ স্ত্রী রিনা বেগমকে হত্যার দায়ে আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ইব্রাহিম খলিলকে (৪০)  গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।
মঙ্গলবার ভোর রাতে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানাধীন তকিরহাট এলাকা থেকে র‌্যাব-১১ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। রায় ঘোষণার ৭ মাস ১৫ দিন পর তিনি গ্রেফতার হন।
র‌্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জোড়া খুনের ঘটনায় ইব্রাহিমকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদ- দিয়েছে আদালত। কিন্তু তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। আমরা তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাকে রামগতি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ইব্রাহিম রামগতি উপজেলার চরলক্ষ্মী গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, পরকিয়া প্রেমিক ইউসুফসহ স্ত্রী রিনাকে ছুরি দিয়ে ইব্রাহিম হত্যা করে। আদালতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম তাকে আমৃত্যু কারাদ- দেন। একই সঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। তবে রায়ের সময় আসামি পলাতক ছিল।
আদালত ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, ইব্রাহিম ফেনীর একটি ইটভাটার মাঝি ছিলেন। রামগতি চরলক্ষ্মী গ্রামের বেল্লাল মাঝির ছেলে ইউসুফ তার সঙ্গে ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এতে প্রায়ই ইউসুফ তার বাড়িতে যেতেন। একপর্যায়ে ইব্রাহিমের স্ত্রী রিনার সঙ্গে ইউসুফের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০১৭ সালের ৩ জুন সন্ধ্যায় ইউসুফ ওই বাড়িতে যায়। এর প্রায় ১৫ দিন আগে ইউসুফ কাজ থেকে চলে আসে। পরে তিনি এলাকায় দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ফেনী থেকে ইব্রাহিম বাড়িতে এসে রিনা ও ইউসুফকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইব্রাহিম দুজনকেই ঘরে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। ইউসুফকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ইউসুফকে হত্যার ঘটনায় পরদিন তার স্ত্রী তছলিমা বেগম বাদী হয়ে রামগতি থানায় মামলা দায়ের করেন।
এছাড়া আহত অবস্থায় রিনাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৬ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে রিনা মারা যান। পরে নোয়াখালীর সুধারাম থানায় নিহতের মা জানু বেগম একটি জিডি করেন। এদিকে হত্যা দুটি একই ঘটনা হওয়ায় ১১ জুন মামলাটি রামগতি থানার মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
ঘটনার দিনই গ্রেফতার ইব্রাহিমকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে তিনি জবানবন্দি দেন। একই বছরের ১২ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগতি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহম্মদ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত ইব্রাহিমকে আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়।