শিরোনাম
নাটোর, ৭ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস) : নাটোর সদর উপজেলা প্রশাসনের নিবিড় পরিচর্যা এবং উদ্ভাবনী
কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে প্রাতিষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা। মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নিয়মিত আয়োজন, কাব কার্যক্রম গতিশীল করার পাশাপাশি প্রত্যেক বিদ্যালয়ে ল্যাংগুয়েজ ক্লাব ও ডিবেটিং ক্লাব প্রচলনের মাধ্যমে আনন্দ-বৈচিত্রময় হয়ে উঠেছে পাঠদান কার্যক্রম। বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষার উৎকর্ষতা সাধনে অনন্য ভূমিকা পালন করায় নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা সাত্তার জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নির্বাচিত হয়েছেন।
আনন্দ-বৈচিত্রের মাধ্যমে গুণগতমানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে নাটোর সদর উপজেলার ১০৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস এবং কাব কার্যক্রমকে নিয়মিত করার পাশাপাশি প্রত্যেক বিদ্যালয়ে ল্যাংগুয়েজ ক্লাব এবং ডিবেটিং ক্লাব তৈরি করে কার্যক্রমের প্রচলন করা হয়েছে
নিয়মিত পরিদর্শন ও মনিটরিং এর মাধ্যমে বিদ্যালয়গুলোর ওয়াশ ব্লকের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ব্যবহার, বিদ্যালয় ও ক্লাসরুমের সার্বিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা হচ্ছে। ক্লাস ভিত্তিক ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রমকে মনিটরিং এর আওতায় এনে শিক্ষার্থীদের সেবার মনোভাবকে উৎসাহিত করা হচ্ছে । খেলাধূলা আর সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপরও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতায় শুধু ল্যাংগুয়েজ আর ডিবেটিং ক্লাব কার্যক্রমই নয়, বিদ্যালয়গুলোতে সরকারি ছুটির নোটিশে অভিনবত্ব আনা হয়েছে। প্রতিটি ছুটির নোটিশে ঐ দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে শিক্ষক ক্লাসে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করছেন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এখন সংশ্লিষ্ট দিবস সম্পর্কে জানতে পারছে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।
বনবেলঘড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা আফরোজ বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আকস্মিক পরিদর্শন আমাদেরকে আরো দায়িত্বশীল হতে শিখিয়েছে।
নেপালদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ফয়জুল বারি চৌধুরী বলেন, আমাদের স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এখন ৯০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।
সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আওলাদ হোসেন জানান, এলাকাভিত্তিক বিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ক্লাষ্টার সভার আলোচ্যসূচীতে প্রশাসনের দিক নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি আলোচনা করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মাহমুদুজ্জামান জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিদের্শনায় উপজেলার ১০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুইটি শিশু কল্যাণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পিটিআই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের চিঠি পাঠানো হয়। ঐ চিঠিতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস এবং কাব কার্যক্রম নিয়মিত করার পাশাপাশি ল্যাংগুয়েজ ক্লাব এবং ডিবেট ক্লাব তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যেক বিদ্যালয়কে এসব কার্যক্রমের বাস্তবায়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রতি মাসের তিন তারিখের মধ্যে প্রেরণ করতে বলা হয়। পরবর্তীতে ছুটির দিন সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবগত করার জন্যেও নির্দেশনা জারি করা হয় ।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আরো জানান, ইতোমধ্যে সকল বিদ্যালয় থেকে সেপ্টেম্বর মাসের প্রতিবেদন পেয়েছি। সকল বিদ্যালয়ে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে। পূর্ববর্তী গড় উপস্থিতি ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে প্রায় ৮৫ শতাংশ অতিক্রম করেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা সাত্তার অভিব্যক্তি ব্যক্ত বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে সম্পৃক্ততা মূল্যায়ন করে জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনোনীত হতে পারা অনেক গৌরবের। জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ গোলাম নবী জানান, প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উদ্ভাবনী কার্যক্রম প্রশংসিত হয়েছে। এ মডেল আমরা জেলার অন্য উপজেলাতে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা ভাবছি।
জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা বলেন, সরকারি নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করে নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সংশ্লিষ্ট উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে যে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন, তা সকলের কাছে সমাদৃত হয়েছে।