বাসস
  ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:১০

নোয়াখালীতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় স্বামী গ্রেফতার

নোয়াখালী, ৮ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস) : জেলার সোনাইমুড়ীতে রহিমা আক্তার সুমি নামে অন্ত:সত্বা স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে স্বামী আবু ইউসুফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার সোনাইমুড়ী থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন, চাটখিল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নিত্যানন্দ দাস এবং সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী।
শনিবার সাতক্ষীরা শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাজিবের নেতৃত্বে  পুলিশ আবু ইউছুফকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর শনিবার দিবাগত রাতে তাকে নিয়ে সোনাইমুড়ী থানায় পৌঁছায় পুলিশ। গ্রেফতার আবু ইউছুফ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর গ্রামের মাওলানা আবু মুছার ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, আবু ইউছুফ একজন পেশাদার চোর। সে বিভিন্ন মসজিদে ঢুকে মুসল্লিদের মুঠোফোন চুরি করতো। সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে নোয়াখালীর চাটখিলের তরুণী সুমির সঙ্গে পরিচয় হয় ইউছুফের। পরিচয়ের সূত্রে দুইজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে গত এপ্রিল মাসে বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়ে সুমি পালিয়ে যায়। দুইদিন পর বাড়িতে ফোন করে জানান, তিনি কুমিল্লা আছেন, ভালো আছেন। এরপর গত চার-পাঁচ মাস আগে সুমি ইউছুফকে নিয়ে চাটখিলের গ্রামের বাড়িতে এলে দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের পুণরায় বিয়ে দেওয়া হয়।
ইউছুফের বরাত দিয়ে ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গত মাসে ইউছুফ সোনাইমুড়ী পৌর শহরের দুশ্চিমপাড়া পৌরসভা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। গত ১ অক্টোবর সকালে ইউছুফ বিদেশে যাওয়ার জন্য স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে। কিন্তু স্ত্রী টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে আবু ইউছুফ সুমিকে থাপ্পড় মারলে তার নাক মুখ দিয়ে প্রচন্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এ সময় ইউছুফ স্ত্রী কুলছুমের গলায় থাকা ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে ।
পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার ইউছুফ জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে স্ত্রী কুলছুমের মৃত্যুর পর তিনি ওই দিন মেঝেতে লাশ ফেলে বাসার দরজায় তালা ঝুলিয়ে ঢাকায় চলে যান। পরদিন তিনি ওই বাসায় আসেন এবং স্ত্রীর লাশ টেনে হিঁচড়ে বাথরুমে নিয়ে লুকিয়ে রাখেন এবং বাথরুমের দরজা বন্ধ করে বাসায় তালা দিয়ে সাতক্ষীরা পালিয়ে যান। 
পুলিশ সুপার জানান, আসামি আবু ইউসুফ একজন পেশাদার চোর। বিভিন্ন মসজিদ থেকে মুসল্লিদের মোবাইল ফোন চুরি করা তার পেশা ও নেশা। তার কাছ থেকে ৯টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।