বাসস
  ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ২০:২১

নির্বাচনী ইশতেহারে উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে অঙ্গীকার ঘোষণার দাবি

ঢাকা, ১৬ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস): রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে সুনির্দ্দিষ্ট অঙ্গীকার তুলে ধরার জোর দাবি জানানো হয়েছে। 
আজ সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘উপকূলের মানুষের ইশতেহার’ শীর্ষক জাতীয় উপকূল সংলাপে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। 
উন্নয়ন সংস্থা ‘লিডার্স’ এবং ‘পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক (প্রান) আয়োজিত সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র। 
সংলাপে সম্মানিত অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন উপ-কমিটির সদস্য শেখর দত্ত, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সদস্য মানবেন্দ্র দেব, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোস্তফা আলমগীর রতন ও সাব্বাহ আলী খান কলিন্স। 
সংলাপে প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মনজুরুল আহসান বুলবুল। 
আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ওয়াটারকিপার্স-বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্ণালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমান, শেরে বাংলা কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, একশন এইডের ব্যবস্থাপক নাজমুল আহসান, অধ্যক্ষ আকমল হোসেন, কাপের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহবুবুল হক প্রমূখ। 
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মন্ডল। স্বাগত বক্তৃতা করেন প্রান-এর প্রধান নির্বাহী নুরুল আলম মাসুদ। 
সংলাপে উত্থাপিত দাবিনামায় বলা হয়, উপকূলীয় অঞ্চলকে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ বিশেষ এলাকা ঘোষণা করতে হবে। উপকূলীয় জনপদের সুরক্ষা ও উন্নয়নে প্রতি অর্থ-বছরে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। টেকসই উন্নয়নের জন্য উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে। নিরাপদ খাবার পানির স্থায়ী ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উপকূলীয় এলাকায় ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের আদলে ‘একটি বাড়ি একটি শেল্টার হোম’, কার্যক্রম শুরু করতে হবে। উপকূলের রক্ষাকবচ বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনের ইকোসিস্টেম রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে উপকূলে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে। স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার করতে হবে।
সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার একটা রাজনৈতিক দলের লিখিত অঙ্গীকার।  এবারে ইশতেহার জলবায়ু ইস্যু লিপিবদ্ধ করলে এটা বড় অর্জন হবে। যারা ক্ষমতায় আসবে তারা কতটুকু ইশতেহার বাস্তবায়ন করেছে তাও দেখা যাবে। বিরোধী দলগুলোকে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
সংলাপে উত্থাপিত দাবির সঙ্গে একমত প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ নেতা শেখর দত্ত বলেন, সারাদেশের সুষম উন্নয়নই বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে দীর্ঘ দিন পুরো উপকূলীয় অঞ্চল অবহেলিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। টেকসই বেড়িবাধ নির্মাণ, সুপেয় পানি ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আগামীতে সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য ইশতেহারে উপকূলের জন্য পৃথক অনুচ্ছেদে উল্লেখ করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুশীল শুভ রায় বলেন, যারা ক্ষমতায় থাকে শুধুমাত্র তাদের ইশতেহার বাস্তবায়ন করা হয়। বিরোধী দলগুলোর ইশতেহারের ইস্যু গুরুত্ব দেওয়া না। তাই জনগণের স্বার্থে সরকারকে বিরোধীদের প্রস্তাবনাগুলোও বিবেচনায় নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় অঞ্চলভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান তিনি।