শিরোনাম
ঢাকা, ১৯ অক্টোবর ২০২৩ (বাসস) : প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, বিচার বিভাগের সমস্যা নিরসনে নিরন্তর প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
দীর্ঘ মেয়াদি বিচার বিভাগীয় পরিকল্পনা করতে সাবেক ও বর্তমান এটর্নি জেনারেল, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির (সুপ্রিমকোর্ট বার) সাবেক ও বর্তমান সভাপতি-সম্পাদকদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বিকালে মতবিনিময় সভা করেছেন প্রধান বিচারপতি।
সুপ্রিমকোর্টের কনফারেন্স কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো.আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো.আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট আইনজীবী ড.কামাল হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সিনিয়র এডভোকেট এম আমীর-উল ইসলাম, সাবেক এটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফ, সাবেক এটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সিনিয়র এডভোকেট মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাবেক সভাপতি মঈনুল হোসেন, এটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিনিয়র এডভোকেট মো.মোমতাজ উদ্দিন ফকির, অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন মেহেদী এবং সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মো.আবদুন নূর দুলাল।
মতবিনিময় সভায় প্রধান বিচারপতি বলেন, এখানে মিলিত হওয়ার উদ্দেশ্য খুবই স্পষ্ট। আমাদের উদ্দেশ্য হলো, বিচার বিভাগ থেকে দুর্নীতি নির্মূলকরণ, আদালতের কার্যক্রম তথা বিচারব্যবস্থা গতিশীলকরণ, বিচারকাজের মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় গবেষণামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের (যেমন- বিচারক ও কোর্টের স্টাফদের) পদক্ষেপ গ্রহণ এবং উদ্দেশ্যসমূহ অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রতিষ্ঠা।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার ব্যবস্থা নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে। কিন্তু এসব অভিযোগ নিরসনের জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা প্রয়োজন এবং কার্যকর মেকানিজম বা পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। এই পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে আমরা সেগুলো চিহ্নিত করব।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনারা সকলেই সুচিন্তিত মতামত ও প্রস্তাব দিয়ে সহযোগিতা করবেন। আপনাদের কাছ থেকে মতামত ও প্রস্তাবসমূহ দুই ভাবে আমাদের কাছে প্রেরণ করা যাবে। প্রথমত, এখানে উপস্থিত সবাই কোনো প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিধিত্ব করছেন, তারা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আপনাদের লিখিত প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন। দ্বিতীয়ত, যারা এখানে ব্যক্তি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছেন তারা তাদের নিজেদের মতামত লিখিতভাবে আমাদের কাছে পাঠাবেন বলে অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, এভাবে সকল অংশীজনের কাছ থেকে আমরা এক এক করে মতামত ও প্রস্তাব সংগ্রহ করব। পরবর্তীতে এসব মতামত ও প্রস্তাব কয়েকটি ধাপে আলোচনা, বিশ্লেষণ ও গবেষণা করে একটি চূড়ান্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
একটি সুন্দর, সক্ষম ও সচল বিচার বিভাগ সকলের চাওয়া উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, আমাদের এই পরিকল্পনা নিখুঁত হবে না জানি, কিন্তু পথচলার জন্য পরিকল্পনা থাকা আবশ্যক। ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য এই পরিকল্পনা আমরা একটি দিকনির্দেশনা হিসেবে রেখে যাব। এর অনেক কিছুই তাদের পথ চলতে সহায়ক হবে। আবার সময়, পরিস্থিতি প্রয়োজনের তাগিদে ভবিষ্যতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা এই পরিকল্পনার সঙ্গে প্রয়োজনীয় যোজন-বিয়োজন করে পরিকল্পনাটিকে আরও সময়োপযোগী করতে সক্ষম হবেন। আমি মনে করি এভাবে আমরা একটি গণমুখী ও জনবান্ধব বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।
সভা শেষে ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলামসহ জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সুপ্রিমকোর্টের প্রকাশনা তুলে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
তাদের হাতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ৫০ বছরের পথচলা, লিটারেচার অ্যান্ড লিগ্যাসি: বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট থেকে প্রকাশিত ৭২ সালের হাতে লেখা সংবিধান উপহার হিসেবে তুলে দেয়া হয়।