শিরোনাম
॥ মনোজ কৃমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস) : ঢাকের বাদ্য, কাঁসার ঘণ্টা, শঙ্খের আওয়াজ আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয় পূজা প্রাঙ্গণ, চলে ভক্তি গীতি। আজ সোমবার সকাল থেকেই দেবী দুর্গার আরাধনায় ম-পে ম-পে চলে পূজা আর চ-িপাঠ।
মহানবমীর সকালে নবমী বিহিত পূজা হয়েছে। সন্ধ্যায় হবে সন্ধি পূজা। পরে মঙ্গলবার সকালে দর্পণ বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে এবারের দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
শুক্রবার ষষ্ঠীতে দেবীর বোধনের পর শনিবার নবপত্রিকায় প্রবেশ ও স্থাপনের পর শুরু হয় মহাসপ্তমীর পূজা। রোববার সকালে মহাঅষ্টমীর বিহিত পূজা হয়। অষ্টমীর সন্ধ্যায় হয় সন্ধিপূজা।
সন্ধিপূজা শেষে মন্ডপগুলোতে ভক্ত, পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। রাত বাড়ার সাথে সাথে আলোক উজ্জ্বল মন্ডপের রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করেন বিভিন্ন বয়সের হাজার হাজার মানুষ। তাদের উপস্থিতিতে মন্ডপ প্রাঙ্গন মুখরিত হয়ে ওঠে। অনেকেই দেবীকে প্রনাম করেছেন। অনেকে তুলেছেন মন্ডপের ছবি। এসময় আলোক সজ্জার সাথে সাউন্ড সিস্টেমের সমন্বয়ে বর্ণিল আলোর ছটা প্রদর্শন করা হয়।
কোন-কোন মন্ডপে পূজার ধূনচি বা আলতি নাচের আয়োজ করা হয়। অনেক মন্ডপে ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নিয়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষ গভীর রাত পর্যন্ত পূজার অনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন।
অষ্টমীর রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলার পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধি অবসরপ্রাপ্ত সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার। তিনি এ সময় মন্ডপ কমিটির সদস্য ও পূজারীদের সাথে পূজার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধি অবসরপ্রাপ্ত সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার এ সময় বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতায় আছেন। তাই সকল ধর্মের মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করতে পারছেন। এ ক্ষেত্রে প্রধানমনস্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরণের সহযোগিতা করছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করার আহবান জানান তিনি ।
পূজারী দেবব্রত রায় রতন বলেন, অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভ শক্তির উত্থান ঘটনাটে আমরা ৫ দিন মায়ের আরাধনা করি। এখানে বিশ্ব শান্তি ও মানুষের কল্যাণের জন্য মায়ের কাছে প্রার্থনা করা হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে ফের ক্ষতায় আসবেন এ প্রত্যাশায় মায়ের কাছে আমরা পূজায় প্রার্থনা করেছি।
গৃহবধূ কৃষ্ণা রানী বর বলেন, নিরপত্তা আছে বলেই গভীর রাত পর্যন্ত মন্ডপে মন্ডপে ঠাকুর দেখেছি। ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলতি নাচ উপভোগ করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদৌলতে পূজায় আলাদ প্রশান্তি পাচ্ছি। তবে মন্ডপগুলো গত বছরের তুলনায় ভিড় একটি বেশি।
দর্শনার্থী বীবেক হালদার বলেন, এ বছর গোপালগঞ্জে পূজা মন্ডপে ভক্তিপূর্ণভাবে পূজা হচ্ছে। সেই সাথে আনন্দ ও উৎসব হচ্ছে সমান তালে। আমরা দৃষ্টি নন্দন ও শৈল্পিক পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করে আনন্দ পাচ্ছি।
পূরোহিত দীপংকর চক্রবর্তী বলেন, আমরা ৫দিন মাতৃ শক্তির উপাসনা করি পৃথিবী থেকে অনাচার, অবিচার, অন্যায় যুদ্ধ নিরসনের জন্য । পূজার সময় শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণের জন্য মায়ের কৃপা লাভের প্রত্যাশা করি । পূজা শেষে প্রতিদিনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য, সাফল্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হচ্ছে।