বাসস
  ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ১১:০৩

গোপালগঞ্জে নবমীর রাত আলোক ছটায় উদ্ভাসিত ॥ আজ দশমী 

॥ মনোজ কৃমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস) : আজ মঙ্গলবার সকালে দশমী বিহিত পূজা ও  দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ৫ দিনের শারদীয় দুর্গাপূজা সমাপ্ত হয়েছে। সিদুর খেলা ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে বাঙালী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ব বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব সমাপ্ত হবে। তারপর দেবী দুর্গার জন্য ১ বছরের অপেক্ষার পালা শুরু হবে। 
মঙ্গলবার সকালে ঢাকের বাদ্য, কাঁসার ঘণ্টা, শঙ্খের আওয়াজ আর উলুধ্বনিত ও ভক্তি গীতির মধ্য দিয়ে দেবী বন্দনা করা হয়। বন্দনা শেষেই মন্ডপে মন্ডপে বিষাদের সুর বেঁজে ওঠে।
শুক্রবার ষষ্ঠীতে দেবীর বোধনের পর শনিবার নবপত্রিকায় প্রবেশ ও স্থাপনের পর শুরু হয় মহাসপ্তমীর পূজা। রোববার সকালে  মহাঅষ্টমীর বিহিত পূজা হয়। অষ্টমীর সন্ধ্যায় হয় সন্ধিপূজা। সোমবার সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে মহা নবমী পূজা। 
নবমী তিথির সন্ধিপূজা শেষে মন্ডপগুলো আলোক ছটায় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। আবাল, বৃদ্ধ,বনিতা মন্ডপগুলোতে মাতৃমুখ দর্শন করতে ভিড় করেন। সব বয়সের মানুষ মেতে ওঠেন উৎসবে। গোপালগঞ্জ উৎসবের শহরের পরিণত হয়। ধূনচি, আলতি নাচ ও ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পূজামন্ডপগুলো মুখরিত হয়ে ওঠে। আলোক ছটার বর্ণিল রংএর ধারার মধ্যে মানুষ নির্মল আনন্দ উপভোগ করেন। 
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম সোমবার টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া উপজেলার পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন। তিনি এ সময় পূজা মন্ডপ কমিটির সদস্যদের সাথে পূজার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এছাড়া তিনি রোবার ও শনিবার  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা এবং মুকসুদপুর, কাশিয়ানী উপজেলার পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন। 
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ জেলা গোপালগঞ্জে উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রয়েছে। সবধর্মের মানুষ এ জেলায় শান্তিপূর্ণসহ অবস্থান করছেন । এসব কারণে এ জেলায় শারদীয় দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ হয়েছে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আল-বেলী অফিফা জেলার ৫ উপজেলার পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেছেন। তিনি পূজা উৎযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দ ও মন্ডপ কমিটির সদস্যদের সাথে পূজার শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি নিরাপত্তার বিয়ষটি খতিয়ে দেখেছেন। 
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আল-বেলী অফিফা বলেন, সবার আন্তরিক সহযোগিতায় পূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ জন্য তিনি পূজা সংশ্লিস্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
গোপালগঞ্জ শহরের বাজার যুব সংঘের সভাপতি দিলীপ কুমার সাহা দিপু বলেন, এ বছর ভাবগাম্ভির্যের পাশাপাশি বিপুল উৎসাহ, উদ্দিপনার মধ্যে পূজা সম্পন্ন হয়েছে। ভক্ত, পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থী উৎসব উদযাপন করেছেন । দশমীর মধ্য দিয়ে পূজা সমাপ্ত হয়েছে। পূজার জন্য ১ বছরের অপেক্ষার পাশা শুরু হল। পূজার প্রতিদিনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে। 
পূজারী সুব্রত ঠাকুর বলেন, পূজার ৫ দিনই মায়ের প্রতি অর্ঘ্য নিবেদন করেছি । মায়ের কাছে অঞ্জলী দিয়েছি । অশুভ শক্তি বিনাশে প্রার্থনা করেছি । শুভশক্তির উদয়ে চন্ডিপাঠ করেছি। যুদ্ধবিগ্রহ, অন্যায়, অত্যাচার ও অনাচার নিরসনে মনের থেকে মায়ের কৃপা প্রত্যাশা করেছি ।
দর্শনার্থী সম্পা সাহা বলেন, পূজায় অংশ নিয়ে অঞ্জলী দিয়েছি। তারপর নবমীর রাতে বাঁধনহারা আনন্দ উপভোগ করেছি। মন্ডপগুলোতে আলোকসজ্জা, সাউন্ড সিস্টেম, প্যান্ডেল ডেকরেশন, সাজসজ্জা, দৃষ্টি নন্দন ও শৈল্পিক প্রতিমা সবা কিছুই ভাল লেগেছে। দশমীতে আজ মাকে বিদায় দিতে চাই না। তারপরও দু:খ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে মাকে বিদায় দিতে হচ্ছে। মা মর্ত্য লোক থেকে স্বার্গ লোকে যাচ্ছেন। পৃথিবী শান্তিময় হোক এটাই মায়ের কাছে একমাত্র প্রার্থনা।