বাসস
  ২৬ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৪৮

গোপালগঞ্জে মানবিক সহায়তার চাল পেয়েছে ১০০২ জেলে পরিবার

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ, ২৬ অক্টোবর,২০২৩ (বাসস): গোপালগঞ্জে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণে বিরত থাকা ১০০২ জেলে পরিবারের মধ্যে মানবিক সহায়তার ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হয়েছে । জেলে পরিবার প্রতি ২৫ কেজি করে চাল বিনামূল্যে বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর ।
এ তথ্য জানিয়েছেন মৎস্য অধিদপ্তরের  গোপালগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজন কুমার নন্দী।
ওই কর্মকর্তা বলেন, গোপালগঞ্জর জেলার সদর উপজেলা, টুঙ্গিপাড়া ও কাশিয়ানী উপজেলার মধ্য দিয়ে মধুমতি নদী প্রবাহিত হয়েছে। এ নদীতে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। মধুমতি নদীর মা ইলিশ সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাই ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে এ নদী থেকে ইলিশ আহরণ, বিপণন, পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে ।  ইলিশ আহরণে বিরত থাকা ১০০২ জেলে পরিবারের মধ্যে মানবিক খাদ্য সহায়তার চাল প্রদান সম্পন্ন হয়েছে ।
এ কর্মসূচির আওতায়  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৪৭০, টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৩০০ ও কাশিয়ানী উপজেলায় ২৩২ পরিবার ২৫ কেজি করে মোট ২৫ মেট্রিক টন ৫০ কেজি   ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হয়েছে। গোপালগঞ্জে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরনে বিরত ও মা মাছ সংরক্ষণ করে জেলায় ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে । এতে জেলে পরিবার ও জেলাবাসী উপকৃত হবেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা ।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, গোপালগঞ্জে  ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মধুমতি নদী থেকে ইলিশ আহরণ, বিপণন, পরিবহন নিষিদ্ধ রয়েছে । এটি সফল করতে আমরা সচেতনতা সভা, প্রচার প্রচারণা, ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টারিং করেছি।  এছাড়া ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টাস্কফোর্স বাজার তদারকি, নদীতে অভিযানসহ মা ইলিশ সংরক্ষণের ব্যাপারে সরকার ঘোষিত অন্যান্য কর্মসূচি প্রতিপালন করে আসছে ।
কাশিয়ানী  উপজেলার ফুকরা ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামের জেলে অমল মালো (৫৬) বলেন, সরকার বিগত কয়েক বছর ধরে  প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা বন্ধ করেছে। এতে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।  আমরা উপকৃত হচ্ছি। ইলিশ আহরণে বিরত থাকায় সরকার আমাদের চাল দিয়ে সহযোগিতা করছে । এ সময় আমরা জাল মেরামত ও অন্যন্য কাজ করে টাকা রোজগার করে সংসার চালাই । এ ২০ দিন একটু কষ্টের মধ্যে চললেও দেশে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। আমাদের সবার সমৃদ্ধি আসে।
গোপালগঞ্জ শহরের ইলিশ ব্যবসায়ী প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, আহরণ বন্ধ ও জেলে পরিবারগুলোকে সরকার সহায়তা করায় দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। ইলিশের মতো অন্যান্য প্রাকৃতিক  মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রজনন মৌসুম চিহ্নিত করে মৎস্য আহরণ, বিপণন ও বাজারজাত করণ বন্ধ রাখতে হবে। চায়না জাল, কারেন্ট জাল, ইলেকট্রিক ডিভাইস দিয়ে মাছ শিকার চিরতরে বন্ধ করতে হবে। তাহলে ইলিশের মতো দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে। আমরা বেশি বেশি করে দেশীয় প্রজাতির মাছ পাব। এ মাছ থেকে সবাই প্রটিন পাবে।