শিরোনাম
সংসদ ভবন, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস) : জাতীয় সংসদে আজ ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আনীত প্রস্তাব (সাধারণ) সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।
সরকারি দলের সদস্য সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধি অনুয়ায়ী সাধারণ আলোচনার জন্য প্রস্তাবটি আজ সংসদে উত্থাপন করেন।
তার আনীত প্রস্তাবটি হলো- সংসদের অভিমত এই যে, ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েলের চালানো নৃশংস গণহত্যার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে এবং এই হত্যাকান্ড বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছে। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে মানবাধিকারের চরম বিপর্যয় ঘটেছে। এই সংসদ ফিলিস্তিনে মানবাধিকার রক্ষায় বিশ্বের সকল বিবেকবান জনগণ, রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিশ্বের মুসলিম উম্মাহকে ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষা এবং তাদের ন্যায়সঙ্গত স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কার্যকরভাবে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা অনেক মানবাধিকারের কথাসহ আরও অনেক কিছু শুনি। কিন্তু আজ ফিলিস্তিনের জনগণ অমানবিক কষ্টের মধ্যদিয়ে জীবনযাপন করছে। সেখানে ইসরাইলের আক্রমনের ফলে বিশেষ করে নারী-শিশুদের উপর হামলা। সবচেয়ে জঘন্য কাজ হয়েছে সেখানে ‘আল আহলি আল আরাব ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতাল’ যেখানে নিরাপদ মনে মায়েরা তাদের সন্তানদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল, সেখানে চিকিৎসাধীন মানুষও ছিল। কিন্তু ওই হাসপাতালে তারা এয়ার এ্যাটাক করে, বোম্বিং করে এবং নারী শিশুকে হত্যা করে। তিনি হাসপাতালে এই হামলার নিন্দা জানান।
তিনি বলেন, এরআগেও সেখানে এভাবে হত্যাকান্ড চালিয়েছে। অন্ত:সত্তা নারীদের হত্যা করেছে। শিশুদের হত্যা করেছে। শিশুরা বড় হলেই নাকি যোদ্ধা হয়ে যায়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যেখানেই গিয়েছি, আমি সেখানেই এই নৃশংসতার প্রতিবাদ জানিয়েছি।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যারা গণতন্ত্রের কথা বলে মানবাধিকারের ছবক দেয় তারা এখন নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে। ফিলিস্তিনে এখন জঘন্য অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে এবং সেখানকার পিতা-মাতারা তাদের শিশুদের গায়ে নাম লিখে রাখছে যাতে মারা গেলে সন্তানের মরদেহ সনাক্ত করা যায়। কখন কে মারা যায় তা বলা যায় না।
তিনি বলেন, আমরা অবাক বিষ্ময়ে তাকিয়ে দেখলাম যারা ভোট আসলে মুসলমান হয়ে যায় এবং ইসলামের কথা বলে স্লোগান দেয়-‘আল্লাহর আইন চাই, সৎ লোকের শাসন চাই’। এই জামায়াতে ইসলাম আর বিএনপি ভোট আসলে মুসলমান হয়। আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে ইসলাম চলে যাবে বলে ধোঁয়া তুলে। তারা এ বিষয়ে একটি শব্দও আজ পর্যন্ত উচ্চারণ করেনি। বিএনপি-জামায়াত ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছে, ইহুদীদের পক্ষ নিয়েছে। এরা মানবতার শত্রু, শুধু ইসরাইল মানবতার শত্রু নয়, তারাও আজকে মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরাইল যেভাবে গাজায় মসজিদে হামলা করেছে, তার অনুকরণ করে বিএনপি-জামায়াত ২৮ অক্টোবর পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে।
প্রস্তাবের উপর আরও আলোচনায় অংশ নেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, সরকারি দলের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জাতীয় পার্টির মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ, কাজী ফিরোজ রশীদ, রুস্তম আলী ফরাজী, জাসদের হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন এবং তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী।
সংসদ সদস্যরা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহকে ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষা এবং তাদের ন্যায়সঙ্গত স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কার্যকরভাবে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান।