বাসস
  ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:১৭

সমবায় খাত দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে : প্রধানমন্ত্রী 

ঢাকা, ৩ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী সমবায় খাত দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। 
আগামীকাল জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘সমবায়ীরা দেশের কৃষি, মৎস্য চাষ, পশু পালন, দুগ্ধ উৎপাদন, পুষ্টি চাহিদা পূরণ, পরিবহন, ক্ষুদ্র ব্যবসা, আবাসন, নারীর ক্ষমতায়ন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে। আমাদের সরকার স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী নিবিড় পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা, প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সমবায়ীদের দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’ 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল একটি সুখী-সমৃদ্ধ-স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সমবায় ছিল তাঁর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণের হাতিয়ার। সমবায়ী এবং সমবায়-সংশ্লিষ্ট সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব। ৫২তম জাতীয় সমবায় দিবসের এ আনন্দঘন মুহূর্তে সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানাই।”
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা চারটি ভিত্তি নির্ধারণ করেছি-স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সরকার। সমবায়ের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন করে স্মার্ট নাগরিক এবং স্মার্ট সমাজ তথা অর্থনীতিকে স্মার্ট করে গড়ে তোলা সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি। এবারের জাতীয় সমবায় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সমবায়ে গড়ছি দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে।’  
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর গণমুখী সমবায় ভাবনার আলোকে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনি ইশতেহারের অঙ্গীকার ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ বাস্তবায়নে সমবায় অধিদপ্তর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকরণে উপজেলা ভিত্তিক নারী উদ্যোক্তা সৃজনের লক্ষ্যে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মহিলা সমবায় সমিতি’-র মাধ্যমে ‘নারী সমবায়ীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা সৃজন’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 
তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সমবায় সমিতির উৎপাদিত পণ্যসমূহ একটি একক নামে বাজারজাতকরণের উদ্যোগ নেয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের সমবায় কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের সফল সমবায় সংস্থাগুলোর সঙ্গে নিয়মিত অভিজ্ঞতা বিনিময় করা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে মূলমন্ত্র হিসেবে শতবর্ষী ডেলটা প্ল্যান তথা ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ২০৩০ সালের মধ্যে অবকাঠামোগত, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, দক্ষতা ও গবেষণা বিষয়ক বিভিন্ন প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। 
তিনি বলেন, ‘আমার প্রত্যাশা, আমাদের সরকারের এ মহাপরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়নে দেশের সমবায় সমিতিগুলো অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব-এর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে আমরা সক্ষম হব, ইনশাল্লাহ।’
প্রধানমন্ত্রী ৫২তম ‘জাতীয় সমবায় দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।