শিরোনাম
ঢাকা, ৪ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে ২৬ হাজার ৭০৯ জনকে আইন সহায়তা সেবা প্রদান করা হয়েছে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের অধীনে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে আইনি সহায়তা দেয়া মামলার সংখ্যা ৩০১৭ টি। এর মধ্যে নিস্পত্তি হয়েছে ২২১৫ টি। এসব মামলায় উপকারভোগী ২৬ হাজার ৭০৯ জন। আইনি পরামর্শ সেবা পেয়েছেন ২৩ হাজার ৬৯২ জন।
জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার (লিগ্যাল এইড) মাধ্যমে সরকারি খরচায় ২০০৯ সাল থেকে সেপ্টেম্বর-২০২৩ পর্যন্ত আইনি সেবার তথ্য সংস্থাটি প্রকাশ করেছে।
গত ২৮ এপ্রিল দেশব্যাপী আইনগত সহায়তা দিবস পালিত হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয় :‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ বিনামূল্যে আইনি সেবার দ্বার উন্মোচন’। দিবসটিতে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস- ২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আইন ও বিচার বিভাগ এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। ২০১৬ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে সরকারি খরচে আইনি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন-২০০০’ প্রণয়ন করে। ২০০০ সালে তৎকালীন শাসন আমলে আইনটি প্রণয়ন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। তারপরের সরকার গুলো আইনটি কার্যকরে উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্টিত নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ দরিদ্র ও অসচ্ছল জনগণের বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিতে আইনটি কার্যকরে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। দেশের সকল আদালত, সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্টে ‘লিগ্যাল এইড’এখন দরিদ্র ও অসহায় বিচারপ্রার্থীদের নিকট ভরসাস্থল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। ২০০৯ সাল থেকে সংস্থাটি জেলা পর্যায়ে কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে সুপ্রিমকোর্ট, শ্রম আদালতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যাপ্তি বৃদ্ধি পায়।
আইনগত সহায়তাপ্রাপ্তির অধিকার মূলত একটি সাংবিধানিক অধিকার। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মূল সংবিধানেই আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারীসহ বিচার প্রক্রিয়ায় ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাইকে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করার বিধান সন্নিবেশিত করে দেন। সংবিধানে স্পষ্টভাবে সন্নিবেশ করা হয়- সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হবে। প্রজাতন্ত্রের সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয়লাভের অধিকারী। কোনো ব্যক্তিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। প্রত্যেক নাগরিকের দ্রুত বিচার লাভের অধিকার থাকবে। সংবিধানে এসব বিধান অন্তর্ভুক্তির মধ্য দিয়ে ধনী বা আর্থিক সামর্থ্যবান নাগরিকদের পাশাপাশি দরিদ্র, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত নাগরিকদের ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা হলেও স্বাধীনতা-পরবর্তী তিন দশকে দরিদ্র, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত নাগরিকদের ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকারে আইনগত সহায়তা প্রদানের প্রাতিষ্ঠানিক কোনো কাঠামো চালু হতে দেখা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রথমবার সরকার গঠন করেই আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থসামাজিক কারণে বিচার পেতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা প্রদান করার লক্ষ্যে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ প্রণয়ন করে দেন এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে সরকারি আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রমকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন।