শিরোনাম
ঢাকা, ৪ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের আত্মপরিচয় অনুসন্ধানে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণমূলক ‘শেকড়ের টানে’ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আজ শনিবার সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি প্রদানের মাধ্যমে কার্যক্রমের শুভসূচনা করেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো: সাবিরুল ইসলাম।
তাঁরই উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের আত্মপরিচয় অনুসন্ধানে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণমূলক ‘শেকড়ের টানে’কার্যক্রমের সূচনাপর্বে ঢাকার ভাসানটেক সরকারি কলেজের ৩৪ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনান এবং ঘুরে ঘুরে দেখান বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির,বীরপ্রতীক। কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পরে আগারগাঁওতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরও পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনাকালে কার্যক্রমের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো: সাবিরুল ইসলাম বাংলাদেশের অগণিত মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় বিস্মৃতির বিরুদ্ধে স্মৃতির ধারক ও বাহক হয়ে ওঠার নিরন্তর প্রচেষ্টা হিসেবে ‘শেকড়ের টানে’ কার্যক্রম শুরুর প্রেরণা বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জাদুঘর অন্য জাদুঘরের মতো নয়, এখানে বাংলাদেশ কথা বলে- আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য, গৌরব-সংগ্রাম, আত্মত্যাগ-ভাবাবেগ সব কিছুর বহি:প্রকাশ ঘটেছে এখানে, হয়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের জীবন্ত ইতিহাস। ঐতিহাসিক অনিবার্যতায় এই জাদুঘরের আত্মপ্রকাশ ঘটে। জাদুঘরটি আজ আমাদের চেতনার বাতিঘর। শিক্ষার্থীদের মাঝে এই চেতনার বিকাশ ঘটিয়ে দ্বিতীয় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা একটি নিরন্তর ধারাবাহিক কাজ। এজন্য প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা। তারই অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণমূলক এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।পর্যায়ক্রমে অচিরেই ঢাকা বিভাগের সকল জেলার সর্বস্তরে ‘শেকড়ের টানে’ কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলেও ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো: সাবিরুল ইসলাম আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের দৃঢ়তা, যুদ্ধের ধংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় গৃহীত কর্মসূচি তুলে ধরে বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, বীর প্রতীক বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ঘটনার স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিলো আসলে জনযুদ্ধ। এদেশের সাধারণ কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষেরা দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদের অনুপ্রেরণার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। এই ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। এটাই এই যুদ্ধের বিশেষ দিক। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও নিজের জ্ঞান তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারাই তাঁর জীবনের বড় সার্থকতা উল্লেখ করে তিনি আহ্বান জানান, বাঙালির গৌরবের ইতিহাসকে টিকিয়ে রাখার ভার তরুণ প্রজন্মের; তাদেরকে সেই দায়িত ¡নিতে হবে।
ভাসানটেক সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং মুক্তিযুদ্ধ গবেষক আবদুল্লাহ আল মোহন বলেন, চলতি বছর থেকে চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রমের সকল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘শেকড়ের টানে’ কার্যক্রমটি খুবই সময়োপযোগী আয়োজন হিসেবে এর গুরুত্বঅপরিসীম। সারাদেশে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণেএমন শিক্ষামূলক কর্মকান্ড পরিচালিত হলে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের আত্মপরিচয় অনুসন্ধানে সঠিক চেতনা বিকাশে গভীরভাবে প্রভাব ফেলবে।
‘শেকড়ের টানে’র দিনব্যাপী আয়োজনে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোঃ নাহিদুরর হমান,ভাসানটেক সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো: আব্দুল হাই,সহকারী অধ্যাপক কানিজ সানজানা শিমু, সহকারী গ্রন্থাগারিক শাহানাজাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।