বাসস
  ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:৩০
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:৪৮

নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা ও ভোটারদের ভয়-ভীতি প্রদর্শনের নিন্দা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের

ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা এবং ভোটারদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। 
 ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা-না করার অধিকার সকল রাজনৈতিক দল ও নাগরিকেরই রয়েছে। কিন্তু, নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ভোটদানে আগ্রহীদের বাধাপ্রদানের অধিকার কারো নেই। আমরা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করা এবং ভোটারদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের তীব্র নিন্দা জানাই।’
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাংবাদিক সম্মেলন আজ সকালে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তি শিল্পী আহ্কাম উল্লাহ্ ও পথনাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান। লিখিত বক্তব্য পাঠ এবং  সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন গোলাম কুদ্দুছ। 
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি, ২০২৪ মহান জাতীয় সংসদের দ্বাদশ নির্বাচন। নির্বাচন সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম অনুষঙ্গ। আমাদের দেশে গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-বন্দরে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে মানুষ গণতন্ত্রের এ মহা আয়োজনে অংশ নিয়ে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে চায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কখনো কখনো ক্ষমতালোভী অগণতান্ত্রিক শক্তি অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখল করে মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার বিপরীতে অবস্থান গ্রহণ করেছে।
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, একটি শান্তিপূর্ণ গ্রহণযোগ্য ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠান গণতন্ত্রের ভিত্তি। সেই লক্ষ্যে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচন কমিশনকে স্বয়ংসম্পূর্ণকরণ এবং সংবিধানের আলোকে নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলসহ সকল মহলের সর্বোত্তম সহযোগিতা করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখার জন্য যেকোনো ইতিবাচক মতামত প্রদান ও গ্রহণ নির্বাচনী প্রক্রিয়াকেই আরো বেশি গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে। কিন্তু আমরা প্রত্যক্ষ করছি যে, বিএনপি-জামাতসহ কতিপয় রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে অকার্যকর ও সাংবিধানিক পদ্ধতি হিসেবে পরিত্যাজ্য “তত্ত্বাবধায়ক সরকার”-এর মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করছে। হরতাল-অবরোধের নামে হিংসাত্মক কার্যক্রম পরিচালনা করে তারা দেশে একটি অমানবিক ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে সচেষ্ট হয়েছে। ট্রেন, বাস, ট্রাকসহ গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ, পেট্রোল-বোমা নিক্ষেপের মাধ্যমে ইতোমধ্যে নারী-শিশুসহ বেশ কিছু নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে এবং অগ্নিদগ্ধ আহতের সংখ্যাও অগণিত।
 জোট সভাপতি বলেন, ‘আমরা এও প্রত্যক্ষ করছি যে, গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ ও দেশবিরোধী এই অপশক্তি তাদের অশুভ এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য আজ মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালিয়ে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং নানা ধরনের স্যাংশন আরোপে বিদেশীদের প্ররোচিত করছে। আমরা এধরনের দেশবিরোধী আত্মঘাতী কর্মকা- থেকে বেরিয়ে আসার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানাই।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সকল জেলা, উপজেলা কমিটি এবং দেশের সকল সংস্কৃতিকর্মীকে এই নির্বাচনকে সফল, শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলা হয় , ‘মনে রাখতে হবে, স্বাধীন বাংলাদেশের মূল ভিত্তি হলো আমাদের ঐতিহ্যপূর্ণ সংস্কৃতি। আগামী নির্বাচনে গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং সংস্কৃতিবিরোধী অপশক্তিকে পরাভূত করার লক্ষে গণজাগরণ সৃষ্টি করে ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। আদর্শের ক্ষেত্রে আমরা নিরপেক্ষ নই। আমাদের আদর্শ মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের আদর্শ ৩০ লক্ষ শহীদের স্বপ্ন। এই আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তিকে বিজয়ী করাকে এই মুহূর্তে আমাদের করণীয় বলে মনে করি। ’
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ গিয়াস, বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিম-লীর সদস্য আবৃত্তিশিল্পী রেজীনা ওয়ালী লীনা ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী আজহারুল হক আজাদ।