বাসস
  ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:২০

নাটোর সমলয় বোরো স্কীমে চারা রোপন কার্যক্রম

নাটোর, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪ (বাসস) : জেলার শস্য ভান্ডার খ্যাত হালতি বিলে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনে বোরো ধানের আগাম চারা রোপন কার্যক্রম শুরু হয়েছে আজ। দুপুরে সমলয় চাষাবাদ স্কীমে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদুদ।
উপজেলার গৌরিপুরে ১৫০ জন কৃষকের ১৫০ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে এই সমলয় চাষাবাদ স্কীম। এজন্যে কৃষকদের ১৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা প্রণোদনা দিয়েছে সরকার। উদ্দেশ্য কৃষকদের সংগঠিত করে নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে মেলবন্ধন তৈরী ও উৎপাদন বৃদ্ধি করা।
নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. ফৌজিয়া ফেরদৌস জানান, আধুনিক বীজতলা তৈরীতে কৃষকদের সাড়ে চার হাজার ট্রে প্রদান করেছে কৃষি বিভাগ। ট্রেতে পলিথিন মোড়ানো হাউজে পরম যতেœ তৈরী করা বীজতলা মাত্র ২০ দিনে চারা রোপনের উপযোগী হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ চারাগুলো রোপন করা হচ্ছে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে। রোপনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে লাইন লোগো পদ্ধতি, যাতে ধানের চারা পর্যাপ্ত আলো-বাতাসে বেড়ে ওঠে এবং পরিচর্যার সুবিধা হয় । পরবর্তীতে পোকা মাকড়ের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহার করা হবে পার্চিং। খরচ কমাতে ব্যবহার করা হবে আধুনিক সেচের এডাব্লুডি (পর্যায়ক্রমিক শুষ্ক ও ভেজা) পদ্ধতি, সার ব্যবহার যথাযথ ও সীমিত করতে ব্যবহার করা হবে সুষম সার, অনায়াসে আগাছা নিধনে থাকবে উইডার মেশিন আর যুগপৎভাবে ধান কাটা, মাড়াই এবং প্যাকিং কাজে ব্যবহার করা হবে কম্বাইন্ড হারভেস্টার।
কৃষকের জমি এবং সেচের খরচ ছাড়া ধানের বীজতলা তৈরী থেকে শুরু করে সমূদয় ব্যয় নির্বাহ করছে সরকার। সরকারী প্রণোদনা কার্যক্রমের আওতায় নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি পূণর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে এই স্কীমের কার্যক্রম মনিটরিং করছে কৃষি বিভাগ।
সুবিধাভোগী কৃষক আব্দুল মতিন বলেন, আমরা বীজতলা থেকে মাত্র ২০ দিনে চারা রোপন করতে পারছি। সতেজ চারাগুলো মেশিনে রোপনের ফলে আহত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে খুব সহজেই জমিতে মানিয়ে যাবে। জীবনচক্রের বেশী সময় জমিতে থাকায় পূর্ণ পুষ্টি পেয়ে ধানের কুশির সংখ্যা বাড়বে, ধানের পরিমাণ হবে বেশী।
কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর এলাকায় বন্যা দেখা দেয়। ফলে ধান ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনাসহ ঐ সময় ধান কাটা শ্রমিকের অভাবসহ নানান সমস্যার মুখোমুখী হতে হয় আমাদের। যান্ত্রিকীকরণের ফলে ঐসব সমস্যা থেকে আমরা রক্ষা পাবো বলে আশা করছি।
কৃষক পলাশ বলেন, বন্যা প্রবন হালতি বিলে আধুনিক এইসব যন্ত্রপাতি আর প্রযুক্তি পর্যবেক্ষণ আর অনুসরণ করে এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও উপকৃত হবেন।
ফৌজিয়া ফেরদৌস বলেন, সকল প্রযুক্তির সমাহারে গড়ে তোলা এই স্কীমকে সফল এবং মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে কৃষি বিভাগ সব রকমের পদক্ষেপ গ্রহন করেছে।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদুদ বাসস’কে বলেন, সমবায়ের মডেল অনুসরণ করে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং সকল প্রযুক্তির সাথে কৃষকের মেলবন্ধন তৈরীতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। আশাকরি এই স্কীম সফলতা লাভ করবে। ভবিষ্যতে জেলার অন্যান্য উপজেলায়ও এই কর্মসূচী ছড়িয়ে পড়বে।’