বাসস
  ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:১৮

টাঙ্গাইলে মধুপুরের মাঠে-মাঠে মনোমুগ্ধকর সরিষা ফুলের সমারোহ

॥ ইফতেখারুল অনুপম ॥
টাঙ্গাইল, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৪ (বাসস): জেলার মধুপুর উপজেলার কৃষকের মাঠে-মাঠে সবুজের মাঝে ফুটে আছে হলুদ সরিষা ফুল। শীতের হাওয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে সুবাস। মধু আহরণে ফুলে-ফুলে বসছে মৌমাছি। সেই সাথে সরিষার হলুদ ফুলে মনোমুগ্ধকর হয়ে ছবি তুলছেন কোমলমতি শিশুসহ সকল বয়সী নারী-পুরুষ। যত দূর চোখ যায় হলুদের সমারোহ।
এই মৌসুমে মধুপুর উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষাবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন।
মধুপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ পৌর এলাকার বিভিন্ন গ্রামের মাঠগুলোতে চোখে পড়ার মত সরিষার ক্ষেত।
মধুপুর উপজেলার কুড়ালিয়া ইউনিয়নের দড়িহাতিল গ্রামের কৃষক আঃ করিম, বেলায়েত হোসেন, আ. হামিদ জানান, কৃষি অফিসারের সহযোগিতায় ও আমাদের এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক তত্বাবধানে আমাদের সরিষার আবাদ ভাল হয়েছে। প্রতিটি সরিষা গাছে প্রচুর পরিমাণ ফুল ধরেছে। ফুলগুলো আকারেও অনেক বড় হয়েছে। মনে হচ্ছে, এবার সরিষার ফলন ভালো পাব। সময়মতো সরিষা তুলে বিক্রি করতে পারলে বাড়তি কিছু টাকা ঘরে আসবে বলে আশা রাখি। এতে পুরোদমে ইরি-বোরো চাষ করতে পারব।
শফিক মিয়া জানান, গতবছর আমার জমি পতিত ছিল। সরিষার দাম ভাল থাকায় এ বছর আমি প্রায় তিন বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। এতে ফলন ভাল হয়েছে। আশা করছি ভাল দাম নিয়ে বিক্রি করতে পারব। ওই টাকা দিয়েই আমি বোরো চাষ করতে পারব। সরিষা চাষী আকবর আলী জানান, এই বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ভালো ফলনের আশা করছি। বাজারেও সরিষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। নিজ পরিবারের তেলের যোগান ও বাড়তি আয়ের জন্য তারা সরিষার চাষ করছেন বলেও জানান।
মধুপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আল মামুন রাসেল বলেন, চলতি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে কৃষকদের সরিষা বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। উন্নত ফলনশীল জাতের বারী-১৪, ১৫, ১৭, ১৮, বিনা- ৪, ৯, ১১ জাতের সরিষার চাষসহ স্থানীয় বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষ হয়েছে।
মধুপুর উপজেলায় ব্যাপক সরিষার আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এ বছর ২ হাজার ৫৪০ হেক্টর  জমিতে সরিষা চাষাবাদ করা হয়েছে। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘা জমিতে ৬ থেকে ৭ মন সরিষার ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যথাসময়ে জমি চাষযোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকেরা সুযোগ বুঝে সরিষা চাষ করেছেন।
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো ধরনের ক্ষতি না হলে এ উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।