শিরোনাম
॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস) : গোপালগঞ্জে উৎসবের আমজে চলছে বোরো ধান আবাদ। চলতি বোরো মৌসুমে জেলার ৫ উপজেলার ৮১ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় প্রায় ৫ লাখ ২০ হাজার টন।
গত ডিসেম্বরের শেষ সপ্তহ থেকে গোপালগঞ্জে বোরা ধান আবাদ শুরু হয়। জানুয়ারি মাসে তীব্র শীত উপেক্ষা করে কৃষক উৎসবের আমজে ক্ষেতে বোরো ধান আবাদ করেন। চলতি মাসের মাঝামাঝি এ জেলায় বোরো আবাদ সম্পন্ন হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আঃ কাদের সরদার বলেন, গোপালগঞ্জে ৮১ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলায় ৬২ হাজার ৩৯০ হেক্টরে বোরো ধান আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ১৪ হাজার ৬৮৬ হেক্টর, মুকসুদপুর উপজেলায় ৯ হাজার ৯০৬ হেক্টরে, কাশিয়ানী উপজেলায় ৮ হাজার ৪৫ হেক্টরে, কোটালীপাড়া উপজেলায় ২২ হাজার ১২০ হেক্টরে ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৭ হাজার ৬৩৩ হেক্টরে বোরো ধানের আবাদ শেষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার বাকী ১৮ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে দ্রুত কৃষক বোরো আবাদ করছেন। আশা কারা যাচ্ছে চলতি মাসের মাঝামাঝি এ জেলায় বোরো আবাদ সম্পন্ন হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, গোপালগঞ্জ জেলার অধিকাংশ জমি এক ফসলী। এসব জমি বছরের বেশিরভাগ সময় পানির নিচে থাকে। নভেম্বর-ডিসেম্বর এসব জমি থেকে পানি নেমে যায়। তারপর কৃষক এখানে বোরো ধান আবাদ শুরু করেন। তাই এ জেলার কৃষকের প্রধান ফসল বোরা ধান। উৎপাদিত বোরো ধান দিয়ে কৃষক সারা বছরে সংসারের খাবারের সংস্থান করেন। এজন্য নভেম্বর মাস থেকেই কৃষক বোরো ধান আবাদে নেমে পড়েন। ইতিমধ্যে নিচু জমিতে বোরা ধান আবাদ শেষ হয়েছে। উঁচু জমিতে উৎপাদিত সরিষাসহ রবি ফসল কাটা হয়েছে। এখন এসব জমিতে পুরোদমে বোরো ধান আবাদ চলছে। বোরো ধান আবাদে কৃষকের মধ্যে যে আগ্রহ দেখা দিয়েছে, তাতে এ জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে এ ধান আবাদ হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
কোটালীপাড়া উপজেলার বান্ধাবাড়ী গ্রামের কৃষক নাদের আলী শেখ বলেন, আমি বিনামূল্যে সরকারি প্রণোদনার ধান বীজ, সার পেয়েছি। এছাড়া বাজার থেকে আরো বীজ সার কিনে ১০০ শতাংশ জমিতে বোরা হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের আবাদ সম্পন্ন করেছি। গত বছর ১শ’ শতাংশ জমি থেকে ১০০ মণ পেয়েছিলাম। সংসারের খরচের ধান রেখে ৬০ মণ ধান বিক্রি করে দিয়ে ছিলাম। ধান বিক্রির টাকা দিয়ে আমন ও সবজি করেছিলাম। তাতে গত বছর ভালো টাকা উপার্জন করেছি। এ বছর হাইব্রিড ধান বেশি রোপণ করেছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে, আশা করছি গত বছরের তুলনায় এ বছর ধানের ফলন আরো ভালো পাব।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক হোসেন আলী বলেন, আমি ১৫০ শতাংশ জমির ধান রোপণ শেষ করেছি। ধান রোপণের সময় প্রচন্ড শীত ছিল। নিজে জমিতে কাজ করেছি। এছাড়া বেশি মূল্যে কয়েকজন কৃষাণ নিয়েছি। সব মিলিয়ে ৭দিনের মধ্যে জমিতে ধান আবাদ সম্পন্ন করেছি। এবছর ধান চাষাবাদে কৃষি বিভাগ থেকে প্রণোদনার বীজ সার পেয়েছি। সেই সাথে তারা প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়েছেন। এ কারণে তীব্র শীতের মধ্যেও ধান আবাদে আমাদের কোন সমস্যা হয়নি। আল্লাহ সহায় হলে ধানের বাম্পার ফলন পাব।