শিরোনাম
॥ মাজহারুল আলম মিলন ॥
পীরগঞ্জ (রংপুর), ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস): জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় বয়ে চলা করতোয়া নদীর তীর ঘেঁষে চতরা, বড়আলমপুর ও টুকরিয়া ইউনিয়নের চরঅঞ্চলে চাষিদের আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে মিষ্টি আলু। কম খরচে সেচ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ এবং স্বল্প সময়ে বেশি ফলনে আনন্দিত চাষিরা। বিগত বছরে কিছুটা হতাশ থাকলেও এ মওসুমে হতাশা কাটিয়ে নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে মিষ্টি আলুর চাষাবাদে ঝুঁকেছেন কৃষকগণ। করতোয়া নদীর জেগে ওঠা বালুচর কৃষকদের স্বপ্ন পূরণ করে চলছে। ধান, ভুট্টাসহ রবি ফসল উৎপাদন বেড়েছে অধিক হারে। তাই শুকনো মওসুমে অন্য ফসলের মধ্যে মিষ্টি আলু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে এলাকার জমির মালিক ও বর্গা চাষিরা।
এলাকার সফল চাষিরা জানান, চর অঞ্চলের বালু মাটিতে বন্যার গড়ানি এসে বালুচরের উর্বরতা বেড়েছে। কৃষক তাদের ইচ্ছে মতো সবধরনের সফলের চাষাবাদ করছেন। বালুচর কাউকে খালি হাতে ফিরে দেয় না।
করতোয়া নদী এলাকা ঘুরে কথা হয় মিষ্টি আলু চাষি ঘাষিপুর গ্রামের রাজু মিয়ার সাথে তিনি বলেন, বালুচর আমাদের এখন সোনার স্বপ্ন। আমরা বালুর নিচে যেকোন ফসলের বীজ বপন করি, সেই ফসল টাই বালুর নিচ থেকে হাসি মুখে ফুটে বেড়ে উঠছে। একসময় এ বালুচরে কোন আবাদ হতো না। এখন যে বীজ বপন করি সেটাই হয়ে যায় আমাদের নতুন স্বপ্ন। আগে এলাকায় জমি বিক্রি হতো সস্তা দরে এখন আর কেউ বালুচরে জমি বিক্রি করে না। কারণ বালুচর এখন কৃষকের আশার আলো।
কুয়াতপুর হামিদপুর গ্রামের আবু বক্করের ছেলে লিটন মিয়া জানান, করতোয়া নদী এলাকায় ম্যাচনার চরে প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ করে ২৩০ শতক জমিতে হাইব্রিড জাতের মিষ্টি আলু চাষ করেছি। লাল মিষ্টি আলুর বীজ মহাস্থান থেকে সংগ্রহ করে জমিতে রোপণ করি। অনেকটাই গোল আলুর মতো করে চাষ করেছি। এটি ৬০/৭০ দিনের মধ্যে জমি থেকে উঠানো যায়। বর্তমানে গাছ প্রতি ১০ থেকে ১২ টি আলু রয়েছে। তার ধারনা গাছ প্রতিটি গাছে দেড় থেকে দুই কেজি হারে আলু আসবে। বর্তমান মিষ্টি আলুর বাজার ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শতক প্রতি ৩ মণ আলু আসবে এবং জমির আলু ৬/৭ লাখ টাকা বিক্রি হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
এলাকার অপরাপর চাষিরা জানান, মিষ্টি আলু আগের যুগ থেকেই এ এলাকায় জনপ্রিয়। এ এলাকার মিষ্টি আলু দেশের বিভিন্ন মোকামে আমদানি করা হয়। এবছর মিষ্টি আলুর (চারা) বা ডাল বন্যার পানি খেয়ে গেছে, এতে করে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে ছিল । তার পরেও উচু জমির (চারা) বা ডাল রোপণ করেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার জানান, কন্দল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কোকি - ১৪, বারি - ৭,৯,১২সহ কয়েকটি জাতের মিষ্টি আলু উপজেলার ৪ শ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। চাষিরা কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে চাষাবাদ করছে। ইতিমধ্যে চাষিরা হাটবাজারে বিক্রি করছে। আবহাওয়া চাষিদের অনুকূলে থাকায় ফলন অনেকটাই ভালো হয়েছে। তাছাড়াও বাজারে মিষ্টি আলুর চাহিদা প্রচুর।