শিরোনাম
॥ মনসুর আহম্মেদ ॥
রাঙ্গামাটি, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস) : জেলার নানিয়ারচরের চেঙ্গী নদীর টিলায় ৬বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের পরীক্ষামুলক চাষ করে সফল হয়েছেন উপজেলার শিপন চাকমা ও উষাময় চাকমা।
ইতিমধ্যে দুভাইয়ের লাগানো সূর্যমুখী গাছে ফুল ধরতে শুরু করেছে। এক একটি সূর্যমুখী ফুল যেন হাসিমুখে সূর্যের আলো ছড়াচ্ছে। চারিদিকে হলুদ ফুল আর সবুজ গাছে সে এক অপরূপ দৃশ্য। চেঙ্গী নদীর সৌন্দর্যের পাশাপাশি সূর্যমুখী ফুলের সমারোহ দেখতে সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ ছুটে আসছেন এ সূর্যমুখী ফুলের বাগানে।
সূর্যমুখী বাগানের সফলতা নিয়ে শিপন চাকমা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে(বাসস) জানান, নানিয়ারচর উপজেলার কাঠালতলী গ্রামে বসবাসকারী তারা দুই ভাই অন্যান্য কৃষিকাজের পাশাপাশি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়ে এ বছর চেঙ্গী নদীর টিলার বুকে ৬ বিঘা জমিতে পরীক্ষামুলকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু করেন। এতেই তারা অনেকটা সফল হয়েছে বলে উল্লেখ করে জানান, উপজেলা কৃষিবিভাগের পরামর্শ নিয়ে খুবই সহজ পদ্ধতিতে সূর্যমুখী বাগান করা যায় এবং তা অন্যান্য কৃষি পণ্যে থেকে সূর্যমুখী চাষ বেশী লাভজনক বলে উল্লেখ করেন শিপন চাকমা। তাদের সূর্যমুখী বাগানের পরিধি ভবিষ্যতে আরো বাড়ানো হবে বলে উল্লেখ করেন সফল কৃষক শিপন চাকমা।
নানিয়ারচর উপজেলা কৃষি অফিসের কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আহসান হাবিব বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে(বাসস) জানান, অল্প সময়ে কম পরিশ্রমে ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়াতে নানিয়ারচরে কৃষকরা এখন সূর্যমুখী চাষে বেশী আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তিনি বাসসকে জানান, সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শের পাশাপাশি রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের মাধ্যমে কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার ও কীটনাশক দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বাসসকে আরো জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ১ কেজি সূর্যমুখী বীজ দিতে হয়। দেড় ফুট অন্তর অন্তর একটি করে বীজ বপন করতে হয়। একটি সারি থেকে আরেকটি সারির দূরত্ব রাখতে হয় দেড় ফুট। মাত্র ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে বীজ বপন থেকে শুরু করে বীজ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রতি একর জমিতে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ বাদ দিয়ে আনুমানিক ২০-২৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় প্রয়োজনীয় সেচেঁর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে সূর্যমুখী ফুলের উৎপাদন আরো অনেক বেশী বাড়ানো সম্ভব বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
জেলার সদর উপজেলা,নানিয়ারচর উপজেলা, বিলাইছড়িসহ বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত পাহাড়ী এলাকাগুলোতে কৃষকরা এখন সূর্যমুখী চাষে অনেক আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
পাহাড়ের পতিত টিলাসহ অন্যান্য আব্যবহৃত জমিগুলো সূর্যমুখী চাষের আওতায় আনতে পারলে এখানকার কৃষকদের স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি পাহাড়ী এলাকাগুলো হতে পারে সূর্যমুখী চাষের একটি সম্ভাবনাময় অঞ্চল।