বাসস
  ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৩২

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডিজিটাল অটোমেশন পদ্বতিতে সেবাদান

বরগুনা, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস): বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল চলছে ডিজিটাল অটোমেশন পদ্ধতিতে। বন্ধ হয়ে গেছে পুরোনো আমলের কাজগ-পত্র সম্বলিত চিকিৎসা পদ্ধতি।
চিকিৎসাসেবাকে ডিজিটাল করার লক্ষ্যে অটোমেশন পদ্ধতি চালুর পর পাল্টে গেছে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম। জাতীয় পরিচয় পত্রের মাধ্যমে জরুরি বিভাগ কিংবা বহির্বিভাগে কোন রোগী রেজিস্ট্রেশন করলেই তার বার্তা কেন্দ্রীয় সার্ভারের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে হাসপাতালের সকল বিভাগে। এতে রোগী পৌঁছানোর আগেই ডাক্তাররা যেমন জানতে পারছেন, তেমনি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রেও আগাম তথ্য যাচ্ছে ল্যাবে। কমে গেছে রোগী ভোগান্তি। বেড়েছে হাসপাতালে রাজস্ব আয়।, বন্ধ হয়েছে ওুষধ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা কীটের অপব্যবহার। আর এসর পদ্ধতির সাথে সাথে রোগীদের হেলথ আইডি সংবলিত হেলথ কার্ড প্রদান কার্যক্রমের ৮০ ভাগ সম্পন্ন করেছে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রেশমিন নাহার আশা টিকিট কাউন্টারে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করতেই কেন্দ্রীয় সার্ভারের মাধ্যমে এ বার্তা পৌঁছে যায় কর্মরত চিকিৎসকসহ হাসপাতালের সকল বিভাগে। রোগ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকের দেয়া টেস্টের তথ্য ল্যাবে পৌঁছে গেছে রোগী পৌঁছানোর আগেই। তাই নমুনা সংগ্রহের জন্য আগেভাগেই পস্তুত ছিলেন টেকনোলজিস্টরা। স্বাস্থ্যসেবা ডিজিটাল করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে অটোমেশন পদ্ধতি চালু হওয়ায় ভোগান্তি ছাড়াই বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন আশার মতো অন্যান্য রোগীরা।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র টেকনোলজিস্ট সুভাষ দত্ত জানালেন, কম্পিউটরের মাধ্যমে আগেই জানতে পারি কী ধরনের রোগী আসছে; -তার কী কী টেস্ট প্রয়োজন। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষায় থাকি।
চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা জানান, এইখানে চিকিৎসা নেবার পরে সেই ডকুমেন্টস হারিয়ে গেলে এখন আর দুশ্চিন্তা করতে হয়না। আমাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল তথ্য হাসপাতালে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
শুধু রোগীর সেবাই নয়; অটোমেশন পদ্ধতি চালুর পর এ হাসপাতালে রাজস্ব আয় বেড়েছে দ্বিগুণ। ২০২২ সালে ৩৬ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের বিপরীতে ২০২৩ সালে আয় হয়েছে ৬৯ লাখ টাকা। এছাড়াও সার্ভারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্টসহ হাসপাতাল থেকে ওুষধ নেয়ার তথ্যও। এতে বন্ধ হয়েছে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কীট ও ওষুধের অপব্যবহার।
হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ আল –আমিন জানিয়েছেন, হাসপাতালের সমস্ত ডাটা আমাদের লাইভ সার্ভারে যুক্ত থাকে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চাইলেই মনিটরিং করতে পারেন।
রোগীদের হেলথ আইডি সম্বলিত হেলথ কার্ড প্রদান প্রক্রিার ৮০ ভাগ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল।পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সেবাপ্রার্থীদের সহযোগিতা প্রয়োাজন বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকা জানিয়েছেন, অটোমেশন পদ্ধতির জন্য রোগীদের জাতীয় পরিচয়পত্র আবশ্যক। আমরা এ ব্যাপারে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।
হেলথ কার্ড বা কাগজপত্রবিহীন চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করতে দেশের যে হাসপাতালগুলোতে কার্যক্রম চলছে; তার মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল একটি। বরগুনা ১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, অটোমেশন বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে প্রচারণার মাধ্যমে সহযোগিতা করা হচ্ছে। বরগুনার চিকিৎসা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে ও আধুনিকিকরণ করতে সচেষ্ট রয়েছি।