বাসস
  ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:১৪

গোপালগঞ্জের রসগোল্লা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস): গোপালগঞ্জের রসগোল্লা জি.আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে ।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংএ এ তথ্য  জানানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আযোজিত এ প্রেস ব্রিফিং এ সভাপতিত্ব করেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম।
প্রেস ব্রিফিং এ বলা হয়  গোপালগঞ্জের রসগোল্লা ৩০ তম পণ্য হিসেবে জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এটি ২৯ তম পণ্য হিসেবে  জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে। গোপালগঞ্জের রসগোল্লা জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম।
এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ জোবায়ের আহমেদ, ইডিসির প্রেসিডেন্ট কাকলি তালুকদার, ইডিসির ট্রেজারার উম্মে সাহেরা এনিকা, ইডিসির পরিচালক (যোগাযোগ) পলাশ চন্দ্র শীল (প্রতাপ) , সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মুন্না, মাহবুব হোসেন সারমাত, সুব্রত সাহা বাপী প্রমুখ ।
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক শেখ জোবায়ের আহমেদ জানান,গত বছরের ২২ আগস্ট গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসনের  উদ্যোগে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ই কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (ইডিসি) সহযোগিতায় "গোপালগঞ্জের রসগোল্লা" কে জিআই পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়। এরই ফলশ্রুতিতে, গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)  ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে "গোপালগঞ্জের রসগোল্লা" নিবন্ধনের জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩ এর ধারা ১২ অনুসারে জার্নালে প্রকাশ করা হয়। ফলে রসগোল্লা গোপালগঞ্জ জেলার প্রথম পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি লাভ করেছে।
গোপালগঞ্জর জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, একটি বিশেষ পণ্য চেনার জন্য জিআই স্বীকৃতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।  কোনো পণ্যের বিস্তারিত না জানলেও খ্যাতির উপর নির্ভর করে সেই পণ্য ব্যবহার করতে পারে ভোক্তারা। এ ছাড়া এটি ভৌগোলিক পরিচিতি বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর আর্থিক উন্নয়নে অবদান রাখে। গোপালগঞ্জের রসগোল্লা দেশ ও দেশের বাইরে ছড়িয়ে দেবার জন্য ভবিষ্যতে  গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন "মিষ্টি চত্বর স্থাপনসহ সকল ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তিনি পণ্যটির প্রচার ও প্রসারে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিদের  সহযোগিতা চান।
ই কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (ইডিসি) প্রেসিডেন্ট কাকলী তালুকদার বলেন, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা জিআই পণ্য হিসেবে  স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা করেছে। আমরা লজিস্টিক ও অনন্যান্য সপোর্ট দিয়েছি। অবশেষে এটির স্বীকৃতি মিলেছে। এটি জেলার অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে গতিশীল করবে।  জিআই হলো ভৌগলিক নির্দেশক চিহ্ন যা কোনো পণ্যের একটি নির্দিষ্ট উৎপত্তিস্থলের কারণে এর খ্যাতি বা গুণাবলী নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত জিআইতে উৎপত্তিস্থলের নাম (শহর, অঞ্চল বা দেশ) অন্তর্ভুক্ত থাকে। কোনো একটি দেশের মাটি, পানি, আবহাওয়া এবং ওই জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাহলে সেটিকে ওই অঞ্চল/দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অর্থাৎ সেই পণ্য শুধু ওই এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও উৎপাদন করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের কোন পণ্য জিআই হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে আবেদন করতে হয়। আন্তর্জাতিকভাবে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
ইডিসির ট্রেজারার উম্মে সাহেরা এনিকা বলেন, আমি  গোপালগঞ্জের রসগোল্লা নিয়ে কাজ করেছি। এটি এক প্রকার রসালো মিষ্টি। এটি খাঁটি ছানা আর চিনি দিয়ে তৈরি করা হয়। এতে ময়দার কোন ব্যবহার নেই। এই রসগোল্লা দেখতে সাদা ও গোলাকার আকৃতির হয়। গোপালগঞ্জের রসগোল্লায় মিষ্টির পরিমাণ খুবই কম। রস বা চিনির সিরা পাতলার কারণে  গোপালগঞ্জের  রসগোল্লার স্বাদ দেশের যে কোন অঞ্চলের রসগোল্লার চেয়ে ভিন্ন । খেতে সুস্বাদু।
প্রেসব্রিফিং এ গোপালগঞ্জে কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।