শিরোনাম
দিনাজপুর, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস): জেলার ১৩ টি উপজেলায় কৃষি অধিদপ্তর ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে । এখন পর্যন্ত ৬০ ভাগ জমিতে ধানের চারা রোপন অর্জিত হয়েছে।
দিনাজপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিরাজুল ইসলাম জানান, চলতি ইরি বোরো মৌসুমী খাদ্যে উৎপাদনের জেলা দিনাজপুরে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিনাজপুরের ১৩ উপজেলায় ঘন কুয়াশা আর শীত উপেক্ষা করে ইরি-বোরো চাষে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষকেরা। আগামী ১৫ মাচ পর্যন্ত ধানের চারা রোপণ কার্যক্রম চলবে।
তিনি বলেন, কৃষকেরা ভোর হতেই শীতল ঠা-া পানিতে নেমে বোরো ধানের বীজ তুলে সেই বীজ জমিতে রোপণ করছেন । বোরো চাষের জন্যে প্রস্তুত করা হচ্ছে জমি। ভোর রাত থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত বোরো জমি প্রস্তুত করতে কৃষকেরা পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করছেন জমি।আগাম আলু উত্তোলনের পর ওই জমিতে রোপণ করছেন ইরি-বোরো ধানের চারা। রোপণ নিয়ে যেন চলছে গ্রামে গ্রামে উৎসবের আমেজ। ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকদের।
কৃষি বিভাগের সূত্রটি জানায়, চলতি মৌসুমের বড় চাষে অধিক ও ভালো মানের ফলন পাওয়ার জন্য জেলা কৃষি অধিদপ্তর এর মাঠ কর্মীরা কৃষকদের নিকট গিয়ে ইরি বোরো ধানের সফল চাষে সঠিক পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।
সেসব জমিতে চাষ করা হচ্ছে ইরি-বোরো ধান। তার সার্বিক পরিচর্যার জন্য কৃষি বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। যেসব কৃষক আমন ধান কাটার পর আলু বা সরিষা চাষ করেননি, তাঁরা আগাম সেসব জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন । ইরি বোরো ধানের মধ্যে কৃষি বিভাগের নতুন উদ্ভাবন করা ভ্যারাইটি হাইব্রীড ও উফসী জাতের ধান এবারে বেশী আবাদ করেছেন । এছাড়া নতুন ভ্যারাইটি হিরা-১, হিরা-২, সোনার বাংলা, বি-ধান ২৮, ব্রী-২৯, ব্রী-৮১, ব্রী-৭৪, ব্রী-৮৯সহ স্থানীয় জাতের কিছু ধান চাষ বেশি হচ্ছে।
দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া জানান, জেলার ১৩ টি উপজেলায় এবার ইরি-বোরে চাষের লক্ষ্য মাএা নির্ধারণক করা হয়েছে ১লাখ ৭৬ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে। অনুকূল আবহাওয়া এবং প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ সরবরাহ থাকায় কৃষকরা নিরবিচ্ছিন্ন ও শান্তিপূর্ণভাবে এবারের ইরি বোরো চারা রোপণে উত্তম সময় অতিবাহিত করছেন।ফলে এবারে জেলায় লক্ষ্যমাত্র অতিরিক্ত জমিতে ইরি বোরো ধানের চাষ অর্জিত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষকেরা রঙিন স্বপ্ন দেখছেন। ধানের চারা বড় হয়ে ফসলে ভরে উঠবে তাদের গোলা।
একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে , আগাম চারা রোপণ করায় ক্ষেতে ফসল ভালো উৎপাদন হয়। আর সারি সারি করে ধানের চারা রোপণ করার ফলে পরিচর্যায় স্বস্থি মিলে। এছাড়া ক্ষেতে রোগবালাই কম হওয়ায় অন্যান্য ফসল থেকে শতকরা ২০ভাগ উৎপাদন বেশি হবে। কৃষকরা বলেন, বীজ, সার সবকিছুর দাম বেশি। শ্রমিকের মজুরি বেশি। সার ও বীজের দাম সহনীয় হলে ধান চাষ করে আরও লাভ পাওয়া যেত।
তারা জানায়, ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডার মধ্যে সময় মতো চারা রোপণ করতে না পারলে আশানুরুপ ফলন পাওয়া যাবে না। তাই চারা রোপণ শুরু করা হয়েছে।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, চলতি মৌসুমে শীতে বীজ তলার তেমন ক্ষতি না হওয়ায় কৃষকেরা বেশ স্বস্থিতে রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি ইরি বোরো মৌসুমে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বাম্পার ধানের ফলন আশা করছেন।