বাসস
  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:০৩

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উপস্থিতি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে : দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস) : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান বলেছেন, গত সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আমাদের কক্সবাজার উপকূলে আশ্রয় নিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 
আজ ঢাকায় গুলশানে এজ গ্যালারি বে’স এজওয়াটারে ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটি আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী “থ্রু দ্য লেন্স অফ হোপঃ রোহিঙ্গা ক্রাইসিস আনফোল্ডেড”- শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সালে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার তাদের (রোহিঙ্গা) উদারভাবে গ্রহণ করে আশ্রয় দিয়েছে। তবুও এই উদারতা আমাদের অর্থনীতির জন্য একটি বড় আকারের বোঝা হিসেবে পরিণত হতে বেশি সময় নেয়নি। 
বছরে এই খাতে খরচ হয়েছে প্রায় ১২০ কোটি টাকা- উল্লেখ করে তিনি বলেন, এছাড়াও শরণার্থীদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ও বিদেশি সাহায্য কমে আসার কারণে খরচের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এর পাশাপাশি শরণার্থীদের আগমনের কারণে স্থানীয় চাকরির বাজারেও প্রভাব পড়েছে, শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শ্রমের মূল্য কমেছে। ফলে স্থানীয় শ্রমিকদের কাজের সুযোগ কমে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোন ধরণের সমাধানে না আসা পর্যন্ত এই সমস্যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে রেখেছে। শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের সিদ্ধান্ত এখনও অনিশ্চিত থাকায় নানা ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে- যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন সীমান্ত অপরাধ যেমন- মাদক ও মানব পাচার। 
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান হল নিরাপদে, স্বেচ্ছায় ও স্থায়ীভাবে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবসন নিশ্চিত করা। আইআরসির এমন একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমরা এক ধরণের ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা করছি, যার মাধ্যমে জাতিসংঘের প্রতিনিধি, দাতা সংস্থা, ইউএসএইড ও বিশ্বনেতারা সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণে সচেষ্ট হতে পারবেন। ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটি আয়োজিত এই প্রদর্শনীটি সকল দাতা সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে, যা রোহিঙ্গা জাতি এবং এই সমস্যা দ্বারা প্রভাবিত স্থানীয় জনগণের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করতে সাহায্য করবে। 
এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান, ইউএসএইড-এর মিশন ডিরেক্টর রিড জে একিলম্যান, ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধি এমএস সুম্বুল রিজভি, ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটির কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিনা রহমানসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা, এমব্যাসি, জাতিসংঘ, আইএনজিও এবং এনজিও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।