বাসস
  ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:৩২

রোহিঙ্গাদের এনআইডি ও পাসপোর্ট করে দেওয়ার অভিযোগে ২৩ জন গ্রেফতার

ঢাকা, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস) : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে জন্মসনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগে ২৩ জনকে গ্রেফতার করেছে । 
গ্রেফতারকৃরা হচ্ছে, রোহিঙ্গা উম্মে ছলিমা ওরফে ছমিরা, মরিজান, রশিদুল, রোহিঙ্গা দালাল আইয়ুব আলী ও মোস্তাকিম, আনসার সদস্য জামসেদুল ইসলাম ও মো. রায়হান, বাংলাদেশি দালাল রাজু শেখ, শাওন হোসেন নিলয়, ফিরোজ হোসেন, মো. তুষার মিয়া, মো. শাহজাহান শেখ, মো. শরিফুল আলম, জোবায়ের মোল্লা, শিমুল শেখ, আহমেদ হোসেন, মো. মাসুদ আলম, মো. আব্দুল আলিম, মো. মাসুদ রানা, ফজলে রাব্বি শাওন, রজব কুমার দাস দীপ্ত, আল আমিন ও মো. সোহাগ। গ্রেফতারকৃতদের পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। 
গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগের একাধিক টিম রাজধানীর আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী ও বাড্ডায় অভিযান চালিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট সংক্রান্ত ডকুমেন্ট, পাসপোর্ট এবং কম্পিউটারসহ তিনজন রোহিঙ্গা ও ১০ জন বাংলাদেশীকে গ্রেফতার করে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী শনিবার কক্সবাজার, টাঙ্গাইল ও ঢাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে দু’জন আনসার সদস্যসহ রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি দালাল চক্রের আরও ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। 
গ্রেফতারকৃতদের হেফাজত থেকে ১৭টি পাসপোর্ট, ১৩টি এনআইডি, ৫টি কম্পিউটার, ৩টি প্রিন্টার, ২৪টি মোবাইল ফোন ও পাসপোর্ট তৈরির সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে।
আজ সোমবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) জানান, শক্তিশালী এই চক্র মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষদেরকে লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে এনআইডি, জন্মসনদ ও পাসপোর্ট বানিয়ে দিত।
তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত চক্রটির একটি দল কক্সবাজার, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি থেকে রোহিঙ্গাদেরকে ঢাকায় নিয়ে আসে। আরেকটি দল এদের জন্য জন্মসনদ, এনআইডি বানিয়ে দেয়। সবশেষে অন্য দলটি ঢাকাসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আনসার সদস্যদের মাধ্যমে ব্যাংকে টাকা জমা দেয়া, বায়োমেট্রিক্স করা ও ছবি তোলার ব্যবস্থা করে দেয়।
ডিবি প্রধান জানান, ছয় ঘণ্টার মধ্যে জন্ম সনদের জন্য ৫ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা, তিন দিনের মধ্যে এনআইডি করার জন্য ২৫ হাজার টাকা এবং পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে থাকে বলে গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। তাদের মোবাইলে শত শত পাসপোর্ট করে দেয়ার ডকুমেন্ট ও ডেলিভারি স্লিপ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে গত তিন মাসে রোহিঙ্গাদের জন্য করা ১৪৩টি পাসপোর্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। ২০১৯ সাল থেকে চক্রটি রোহিঙ্গাদের, বাংলাদেশী দাগী অপরাধীদেরকে ভিন্ন নাম ও ঠিকানায় পাসপোর্ট করে দিচ্ছে বলে স্বীকার করেছে। 
গ্রেফতারকৃতরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রংপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও বরিশাল জেলার ঠিকানা ব্যবহার করে জন্মসনদ ও এনআইডি তৈরি করে তার ভিত্তিতে পাসপোর্ট বানিয়ে দিত।