বাসস
  ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৩১

বিচারককে মন ও মননে স্বাধীন হতে হবে : বিচারপতি বোরহান উদ্দিন

ঢাকা, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ (বাসস) : সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বোরহান উদ্দিন বলেছেন, স্বাধীনভাবে বিচারকার্য পালনের জন্য বিচারককে মন ও মননে স্বাধীন হতে হবে।
আপিল বিভাগের ১ নম্বর বিচারকক্ষে  এক বিদায়ী সংবর্ধনায় আজ এ কথা বলেন বিচারপতি বোরহান উদ্দিন।
বোরহান উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন। নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা ও বিচার বিভাগ একে অপরের পরিপূরক। তা সত্ত্বেও বিচার বিভাগের দায়িত্ব সংবিধানের অভিভাবক হিসেবে অনন্য। কারণ, আইনসভা প্রণীত কোনো আইন সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্য কি না, তা দেখার অধিকার বিচার বিভাগের। পাশাপাশি নির্বাহী বিভাগের কোনো কার্যকলাপ সংবিধানের তৃতীয় ভাগে বর্ণিত মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না, তা দেখার ক্ষমতা বিচার বিভাগের। এ কারণেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অপরিহার্য।
বিচারপতি বোরহান উদ্দিন বলেন, সুশাসন তথা আইনের শাসন নিশ্চিত করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। একই সঙ্গে এ কথাও অত্যন্ত ঠিক যে বিচারিক স্বাধীনতা অনেকাংশে নিশ্চিত করে বিচারকের অন্তরের স্বাধীনতা। স্বাধীনভাবে বিচারকার্য পালনের জন্য বিচারককে মন ও মননে স্বাধীন হতে হবে। বিচারককে নিজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে হবে।
সাংবিধানিক আদালতকে দেশের সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর হতে হবে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি বোরহান উদ্দিন। 
বিদায়ী সংবর্ধনায় আইনজীবীদের উপস্থিতিতে আদালতকক্ষ কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও আপিল বিভাগের অপর চার বিচারপতি এ সময় বেঞ্চে ছিলেন। 
আপিল বিভাগে বসে আজ শেষ দিনের মতো বিচারকাজে অংশ নিয়েছেন বিচারপতি বোরহান উদ্দিন। আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে তাকে এটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেয়া হয়।
৬৭ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী বিচারিক জীবন শেষে অবসরে যাচ্ছেন বিচারপতি বোরহান উদ্দিন।
২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি বিচারপতি বোরহান উদ্দিনকে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
এর আগে ২০০৮ সালের ১৬ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। দুই বছর পর ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারক হন বিচারপতি বোরহান উদ্দিন।
১৯৫৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন বোরহান উদ্দিন। তার বাবার নাম আব্দুস সবুর ও মায়ের নাম মমতাজ সবুর। তিনি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৫ সালের ৩ মার্চ অধস্তন আদালতে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। এর তিন বছর পর ১৯৮৮ সালের ১৬ জুন সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে তালিকাভুক্ত হন। ২০০২ সালের ২৭ নভেম্বর আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি।