বাসস
  ২২ মার্চ ২০২৪, ১৬:১২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্মার্ট চাষ পদ্ধতিতে শসা চাষে মোস্তাকিমের সাফল্য

// মো. শফিকুল ইসলাম //
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২২ মার্চ, ২০২৪ (বাসস): আধুনিক ও স্মার্ট চাষ পদ্ধতির নাম মালচিং পদ্ধতি। মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষ করে এক অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রবাস ফেরত কৃষক মোস্তাকিম সরকার। 
জেলার আখাউড়া উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় দেশীয় পদ্ধতিতে কোনো প্রকার রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে বাণিজ্যিকভাবে মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষ করছেন তিনি। একদিন পর-পর জমি থেকে ৩০-৩৫ মণ শসা বিক্রি করছেন। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে ও বাজার দর ভালো থাকলে ৩ লাখ থেকে ৪ লাখ টাকা বিক্রি হবে। এতে খরচ বাদে ২ লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় হবে।
জানা যায়, কৃষক মোস্তকিম জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউপির ধাততুর পহেলা গ্রামের রফিকুল ইসলাম সরকারের ছেলে। তিনি ৪ বছর আগে সীমান্তবর্তী মোগড়া ইউপির ৩ বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষ শুরু করেন।  
কৃষক মোস্তাকিম বলেন, অন্যান্য সবজির পাশপাশি ৩ বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে শসা আবাদ করতে সেচ, বীজ, জমি ইজারা, পরিচর্যাসহ অন্যান্য খরচ হয়েছে  প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। চারা রোপণের পর থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে জমিতে শসার ভালো ফলন আসে। একদিন পর-পর ৩০-৩৫ মণ শসা বিক্রি হচ্ছে। বর্তমান বাজারে শসার ভালো চাহিদা থাকায় প্রতি মণ শসা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে পাইকারিতে বিক্রি করছি। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার শসা বিক্রি করা হয়েছে। আশা করছি, ফলন ও বাজার দর ভালো থাকলে সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা বিক্রি হবে। এতে খরচ বাদে ২ লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় হবে। 
সরজমিনে দেখা যায়, চারদিকে বাঁশের খুঁটি, নাইলন সুতা আর জিআই তার দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মাঁচা। মাচায় ঝুলে আছে ছোট বড় অসংখ্য শসা। যে দিকে দৃষ্টি যায় শসা আর শসা চোখে পড়ছে। এই সময় জানা যায়, মালচিং পদ্ধতিতে প্রথমে জমিতে পরিমিত জৈব সার দিয়ে সারি-সারি বেড তৈরি করা হয়। পরে সারিবদ্ধ বেডগুলো পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। বেডে নির্দিষ্ট দূরত্বে পলিথিন ফুটো করে সবজির বীজ বা চারা রোপণ করতে হয়। এই পদ্ধতিতে কৃষকের উৎপাদন খরচও তুলনা মূলকভাবে অনেক কম হয়।  
কৃষক মোস্তাকিম সরকার আরও জানান, এই মাটিতে সবজি চাষ নিয়ে শুরুতে খুবই চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক পরামর্শে ও নিজের সঠিকভাবে পরিচর্যায় উৎপাদনে তেমন কোনো বেগ পেতে হয়নি। সবজি চাষ কম খরচে লাভ বেশি হয়।
এই ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম বলেন, ফলন বৃদ্ধিতে সব সময় স্থানীয় কৃষকদেরকে পরামর্শ দেওয়া হয়। মালচিং পদ্ধতিতে শসা আবাদ করে সত্যিই কৃষক মোস্তকিম সরকার একজন আদর্শ কৃষককে পরিণত হয়েছেন।