শিরোনাম
॥ কামাল আতাতুর্ক মিসেল ॥
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস): জেলার কোটবাড়ী প্রাচীন বৌদ্ধ সভ্যতার ঐতিহাসিক স্থাপনাসহ নানা প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনে সমৃদ্ধ। কুমিল্লা অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণ কোটবাড়ীতেই রয়েছে ঐতিহাসিক শালবন বৌদ্ধ বিহার। তার কাছেই আধুনিককালে ১৯৯৫ সালে নির্মিত হয়েছে নব শালবন বিহার। প্রাচীন শালবন বিহারের প্রাণস্পন্দন ইতিহাসের বিস্মৃতির তলায় হারিয়ে গেলেও নব শালবন বিহার নতুন কালের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের শিক্ষায়তন তথা উপাসনালয় হিসেবে প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর।
এ নব শালবন বিহারেই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বিশ্ব শান্তি প্যাগোডা বা বৌদ্ধ মন্দির। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সৌন্দর্যের জন্য পুণ্যার্থীসহ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে আসছে এ দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা।
নব শালবন বিহারে আছে থাইল্যান্ড থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া প্রায় ছয় টন ওজনের এবং ৩০ ফুট উচ্চতার ধাতব বুদ্ধমূর্তি। বিহারের প্রার্থনালয়ের ছাদের ওপর স্থাপন করায় মূর্তিটি অনেক দূর থেকে দেখা যায়।
সোনালি রঙের মূর্তিটিতে সূর্যের আলোকরশ্মি আছড়ে পড়লে দেখতে চমৎকার লাগে। শান্তি প্যাগোডার ধবধবে সাদা ও সোনালি রঙের কাঠামো আর সোনালি বুদ্ধমূর্তি চারপাশ ঝলমল করে তোলে।
বিশ্বশান্তি প্যাগোডায় ওঠার মুখেই রয়েছে সোনালি রঙের নাগরাজের প্রতিমূর্তি। বিশাল বুদ্ধমূর্তির নিচেই দ্বিতীয় তলায় রয়েছে উপাসনালয়।
এর চারপাশে রয়েছে থাইল্যান্ডের প্রচলিত আদলের আরো চারটি মূর্তি। উপাসনালয়ের ওপরের ধাপে আছে চারটি পিতলের চূড়া। নব শালবন বিহার ক্যাম্পাসে আরো রয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনালয়, মেডিটেশন সেন্টার, শালবন বিহার স্কুল ও অনাথ আশ্রম, লাইব্রেরি, শালবন বিহার জাদুঘর, সেমিনার হল, অতিথিশালা ও হোস্টেল।
ব্রাক্ষণবাড়িয়া থেকে নব শালবন বিহারে ঘুরতে আসা শারমিন আক্তারকে বাসসকে বলেন, এটি কুমিল্লার পর্যটন খাতে নতুন সংযোজন। আমি ঘুরে দেখে মুগ্ধ হয়েছি। আরেক দর্শনার্থী বিপুল সাহা বলেন, মুসলমান, হিন্দু সম্প্রদায়সহ সব ধর্ম-সম্প্রদায়ের মানুষ এখানে ঘুরতে আসে। এই স্থাপনা সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ।
নব শালবন বৌদ্ধ বিহারের প্রবেশপথে টিকিট বিক্রেতা বিষ্ণু হাজারী বাসসকে বলেন, বিহার ও প্যাগোডা দেখতে দর্শনার্থীকে ৩০ টাকা দিয়ে প্রবেশ করতে হয়। পর্যটন মৌসুম ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাসে দর্শনার্থীর ঢল নামে। শালবন বিহার স্কুল ও অনাথ আশ্রমের শিক্ষক রনি মার্মা বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে শতাধিক শিশু পড়াশোনা করে। তাদের বেশির ভাগই অনাথ। এখানে প্রতিদিন বিভিন্ন ধর্মের মানুষজন ঘুরতে আসে।