শিরোনাম
জয়পুরহাট, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস): জেলায় ভুট্টা চাষে এবারও বাম্পার ফলনের আশা কৃষক ও কৃষি বিভাগের। জেলার পাঁচ উপজেলায় চলতি ২০২৩-২৪ রবি মৌসুমে ৮৫৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। এতে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার মেট্রিক টন ভুট্টা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বাসস’কে জানায়, মাটির গুণাগুণ ভুট্টা চাষ উপযোগী হওয়ায় জয়পুরহাট সদর উপজেলা, পাঁচবিবি, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর উপজেলায় ভুট্টার চাষ বেশি হয়ে থাকে। কৃষকদের ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। বিএডিসির পক্ষ থেকে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ভুট্টা বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। ভুট্টা চাষে তুলনামূলক লেবার ও পরিচর্যা খরচ কম হওয়ার কারনে লাভ হয় বেশী। সদরের দাদরা ধুলাতর গ্রামের কৃষক রুস্তম আলী ফলন ভাল ও ভুট্টা চাষ লাভজনক হওয়ায় প্রতিবারের মতো এবারও দেড় বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি।
ভুট্টা স্বল্প পানির চাহিদা সম্পন্ন ফসল হিসেবে জনপ্রিয়। ভুট্টা আবাদে বীজ বপনের ২৫-৩০দিন পর প্রথমে সেচ প্রয়োগ ও আগাছা দমন, ৫০-৫৫ দিন পর ২য় বার, ৭০-৭৫দিন পরে ৩য় বার হালকা সেচ প্রয়োগ করলে বাম্পার ফলন পাওয়া যায়। রোগ বালাই, পোকা মাকড়ের আক্রমণ খুবই কম হয় ভুট্টাতে। ফলে জেলায় দিন দিন ভুট্টার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি ২০২৩-২৪ মৌসুমে জেলায় ভুট্টার চাষ হয়েছে ৮৫৫ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের তুলনায় ১৫ হেক্টর বেশি। ভুট্টা ফসলের মোচা বা কব সংগ্রহের পরে গাছের অবশিষ্ট অংশ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়। ভুট্টা হতে আটা, ময়দা, গো খাদ্য তৈরিতে দেশে এর ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। মুরগি ও গো-খাদ্য তৈরির জন্য জয়পুরহাটের ফিডমিলগুলোকে জেলার বাইরে থেকে ভুট্টা আমদানি করতে হয়। আমদানিরোধে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধিতে জয়পুরহাট জেলায় বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাফসিয়া জাহান। কৃষকদের মাঝে উন্নত জাত সরবরাহ, উদ্ধুদ্ধকরণ ও পরামর্শ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জেলায় সুপারসাইন-২৭৬০ জাতের ভুট্টার নতুন জাত প্রবর্তনে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বলেও জানান তিনি।
কৃষি বিভাগ জানায়, ৩৩ শতাংশ এক বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করার জন্য সরকারের রাজস্ব খাতের আওতায় প্রতিজন ভুট্টা চাষীকে ২ কেজি করে বীজসহ ১০ কেজি এমওপি সার ও ১০ কেজি ডিএপি সার দেওয়া হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে প্রযুক্তিগত কলাকৌশল ও পরামর্শ পেয়ে চাষাবাদ করতে পেরে অত্যন্ত খুশী বলে জানান ভুট্টা চাষীরা ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন বলেন, জেলায় এবার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সদর উপজেলায় ৩৪০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৩৫০ হেক্টর, আক্কেলপুরে ১১০ হেক্টর, ক্ষেতলালে ৩৫ হেক্টর ও কালাই উপজেলায় ২০ হেক্টর। আবহাওয়া ভাল থাকলে জেলায় এবার প্রায় ১২ হাজার মেট্রিক টন ভুট্টার উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।