শিরোনাম
॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ২০ মে,২০২৪ (বাসস): দ্বিতীয় ধাপে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল । দলীয় প্রতীক না থাকায় প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। শেষ মুহূর্তে নির্বাচনকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মাঝে বিপুল আগ্রহ, উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। চায়ের আড্ডা ও হাটে মাঠে নির্বাচন নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ। তবে প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে নেই কোন অভিযোগ, শঙ্কা ও ভীতি। সুষ্ঠূু-নিরপেক্ষও উৎসবমুখর পরিবেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষ হবে এমনটাই প্রত্যাশা সবার ।
ভোটাররা ধারনা করছেন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ত্রিমুখী লড়াই হবে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ৩ প্রার্থীর মধ্যে। তবে খুব অল্প ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান পদে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হবে।
সহকারী রিটানিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কাশিয়ানী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ১১ জনপ্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, মহিলাভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন।
১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত কাশিয়ানী উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ৯৬ হাজার ১৮৩ এবংপুরুষ ভোটার ৯৭ হাজার ১৭৮ জন। উপজেলার ৭৫টি কেন্দ্রে আগামী ২১ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
চেয়ারম্যান পদে দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোক্তার হোসেন, আনারস প্রতীকে মুন্সী ফররুখ হোসাইন মিন্টু ও মোটর সাইকেল প্রতীকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কাজী নুরুল আমিন তুহিন প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন। তিনজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সোহাগী রহমান মুক্তা, জিনাত রেহানা খান, শামচুন্নাহার মিনা জামান, তুলি আক্তার এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামিনুর রহমান জাপান, দীনবন্ধু মন্ডল, আবুল কালাম আজাদ কালু মিয়া ও সুলতান আহমেদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী বীরমুক্তিযোদ্ধা মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আমি উপজেলার প্রতিটি এলাকার সাধারণ জনগণের বিপুলসাড়া পাচ্ছি। আমি অতীতে উপজেলা বাসীর সুখে-দুঃখে ছিলাম। বর্তমানে আছি, আগামীতেও থাকবো। আমি নির্বাচিত হলে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে সকল সহযোগিতা ও অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়ন করবো।আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটারদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ, উদ্দীনা ও আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। তাই এ নির্বাচন হবে উৎসবমুখর ও অংশ গ্রহণমূলক।’
আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মুন্সী ফররুখ হোসাইন মিন্টু বলেন,‘ আলহামদুল্লাহ সবখানে ভোটারদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। দিন দিন আনারস প্রতীকের ভোট বাড়ছে। আমি তেমন কোন প্রতিশ্রুতি দিতে চাইনা। আমি নির্বাচিত হলে জনগণের পাশে থাকবো, সব ধরণের সহযোগিতা করবো। আশাকরি বিপুল ভোটের ব্যবধানে আনারস জয়ী হবে।’
মোটর সাইকেল প্রতীকের প্রার্থী কাজী নুরুল আমিন তুহিন বলেন,‘আমার নির্বাচনী প্রস্তুতি অনেক ভালো। ১৪টি ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকায় সাধারণ মানুষের সাথে কুশল ও মতবিনিময় করেছি। তাদের পাশে আছি এবং খোঁজ-খবর নিচ্ছি। আমি খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের সাথে মিশে থাকতে চাই। আমি ইনশাল্লাহ নির্বাচনে জয়ী হবো। এখানে শন্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। নির্বাচন নিয়ে আমাদের আপাতত কোন অভিযোগ নেই। ’
উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নেই আলাদা আলাদা প্রভাব রয়েছে প্রার্থীদের। আঞ্চলিকতার প্রভাবে তিনজনের মধ্যেই ভোট ভাগাভাগি হবে। এছাড়া রাজনৈতিক সাংগঠনিক গুরুত্ব ও আত্মীয়করণের মাধ্যমে ভোট ভাগাভাগি নিয়েও রয়েছে সমীকরণ। ভোটের প্রচারে এগিয়ে থাকলেও; ভোটের পরে পাল্টে যেতে পারে ভোটের অঙ্ক। তাই ভোটাররা বলছেন, কোনো প্রার্থীর একতরফা ভোট পাওয়ার তেমন কোন সুযোগ নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান জানান, সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এখানে উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।