শিরোনাম
বাগেরহাট, ২৬ মে, ২০২৪ (বাসস): বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় “রেমাল” উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। মোংলা বন্দর ও তার আশপাশ এলাকায় ১০ নম্বর মহাবিপৎ সংকেত জারি করা হয়েছে। ফলে আতঙ্ক বাড়ছে জেলার মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যে মানুষ ছুটতে শুরু করেছে আশ্রয় কেন্দের দিকে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে থেমে থেমে বৃষ্টি ও ধমকা হাওয়া বইছে।
জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন জানান, ঘুর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৫১ জন ধারণক্ষমতা বিশিষ্ট জেলার ৩৫৯টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুপুর নাগাদ এলাকাবাসীকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনার চেষ্টা চলছে। রাত থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাবার জন্য এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে এবং সাড়ে ৩ হাজার সেচ্ছাসেক নিরলস কাজ করে চলেছে। সকাল পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। এদের শুকনা খাবার, পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, সেনিটেশন সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে।
এছাড়া সব আশ্রয় কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। জেলার সব সরকারি কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করে কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আপদকালীন চিকিৎসা সেবার জন্য ৮৮টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
তিনি জানান, জেলায় ত্রাণ বাবদ ৬৪৩ টন চাল ও নগদ ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি উপকূলীয় উপজেলা মোংলা মোরেলঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলায় সিপিপি, রেড ক্রিসেন্ট, রোভার,স্কাউট এর ৩ হাজার ৫০৫ জন, স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগ মোকালোয় কাজ করছে। উপকুলীও এই তিন উপজেলায় ঝড় সহনশীল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রস্তুত রাখা, শুকনো খাবার মজুদ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী মজুদ করার বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সিভিল সার্জন, নির্বাহী প্রকৌশলী, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ-বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান জানান, মোংলা বন্দরে ৭ নম্বর সংকেতের পরপরই বন্দরে থাকা দেশি-বিদেশী জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজ বদ্ধ রয়েছে। এছাড়া ঘূিির্ণঝড় মোকাবেলায় ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে
রেমাল’র গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যাবেক্ষণের জন্য একটি মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। বর্তমানে মোংলা বন্দরের বহিঃনোঙ্গরে হাড়বাড়িয়া এলাকায় ৬টি বিদেশী জাহাজ রয়েছে। এছাড়া নৌ-চ্যানেলটি নিরাপদ রাখতে সকল ধরনের নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে নোঙ্গর করেছে।
বাগেরহাট পানি উন্নয় বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মাদ আলবিরুনী জানান,
জেলায় ১০ কিলোমিটার ভেড়িবাধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় দু’টি যায়গায় জরুরী সংস্কার কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সার্বক্ষণিক নজরদারির জন্য একটি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের ডিএফও কাজী মো. নূরুল করিম জানান, সুন্দরবন বিভাগের সব বন কর্মীকে নিরাপদে থেকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দেশী-বিদেশী সব পর্যাটককে নিরাপদে ফিরে আসার জন্য বনবিভাগ সতর্কতা জারি করেছে।