বাসস
  ১৩ জুন ২০২৪, ২১:০১
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৪, ২১:০৪

জমে উঠেছে খাগড়াছড়ির কোরবানীর হাট: প্রাকৃতিকভাবে পালন করা গরুর চাহিদা সমতলেও   

খাগড়াছড়ি, ১৩ জুন, ২০২৪(বাসস): জেলার বিভিন্ন কোরবানীর পশুর-হাটগুলো বেশ জমে উঠেছে। ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকার মধ্যে মিলছে কাঙ্খিত গরু। তবে দাম নিয়ে অখুশি খামারী ও বিক্রেতারা, তবে খুশী ক্রেতারা।  প্রাকৃতিকভাবে গরু লালন-পালন হওয়ায় খাগড়াছড়ির কোরবানীর গরুর চাহিদা সমতলেও। 
হাটগুলোতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা আসছেন। ক্রেতা বিক্রেতায় মুখর খাগড়াছড়ির জেলার প্রতিটি হাটবাজার। এখানকার দেশি জাতের মাঝারি এবং ছোট আকৃতির গরুর চাহিদা রয়েছে দেশব্যাপী। তাই বাইরের ব্যবসায়ীরা গরু নিয়ে যাচ্ছে সমতলে।
খাগড়াছড়ির ৫২টি স্থানে রয়েছে কোরবানীর পশুর হাট। এখানে  ছোট আকারের গরু ৫০ থেকে ৬০ হাজার ,মাঝারি আকারের গরু ৬০ থেকে ৮০ হাজার এবং বড় গরু ১ থেকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃত্রিম কোন ওষুধ ব্যবহার না করে এখানে প্রাকৃতিকভাবে গরু পালন করা হয় বলে সমতল জেলাগুলোর তুলনায় খাগড়াছড়ির গরুর বাড়তি আকর্ষণ রয়েছে। এ কারণে প্রতি বছরের মতো এবারও বিপুল সংখ্যক সমতলের ব্যবসায়ীর আগমন ঘটেছে খাগড়াছড়িতে। কিন্তু দাম নিয়ে অখুশি-বিক্রেতা, তবে ক্রেতারা খুবই খুশি।
পার্বত্য এ জেলায় ছোট ছোট বেশ কিছু খামারে পালন করা হয় দেশি-বিদেশি জাতের গরু। তবে এখানকার অধিকাংশ গরু, ছাগল স্থানীয় কৃষকেরা লালন পালন করেন। কৃষকের ঘরে পালন করা দেশি জাতের এইসকল গরু, ছাগল প্রাকৃতিক পরিবেশে পাহাড়ের লতাপাতা ঘাস খেয়ে বেড়ে উঠে।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় এবছর কোরবানী উপযোগী ১৫ হাজার ২৬টি গরু এবং ৪২ হাজারের কাছাকাছি ছাগল রয়েছে। এছাড়াও ২৪টি মহিষ এবং ৪২৫টি ভেড়া রয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলার ৯টি উপজেলার হাটগুলো থেকে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যাচ্ছে শত-শত গরু, ছাগল। হাটগুলো ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতা বিক্রেতাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
খাগড়াছড়ির পৌরসভার গরুর হাটে গরু কিনতে আসা মো. আকতার হোসেন জানান, বাজারে গরু বিক্রেতার চেয়ে ব্যবসায়ি আর দালালের উপস্থিতি অনেক বেশি। এ কারনেই গরুর বিক্রি মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দাম হাঁকা হচ্ছে। যে গরু ১ লাখ টাকায় বিক্রি হবে তার দাম চাওয়া হচ্ছে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা।
ভাই-বোন ছড়া থেকে হাটে গরু বিক্রি করতে আসা সোনাবরণ চাকমা জানান, তিনি হাটে ৮টি গরু নিয়ে এসেছেন। এর মধ্যে তিনটি গরু বিক্রি করেছেন। কোরবানীর এখনো আরো কয়েকদিন বাকি থাকায় ক্রেতারা দরকষাকষি করছেন। সামনের হাটের দিনগুলোতে হয়তো বিক্রি হয়ে যাবে। এদিকে বিক্রেতা ও খামারীরা জানান, প্রত্যাশিত মূল্য না পাওয়ায় তারা হতাশ ।
হাটের ইজারাদার মো. জামাল হোসেন জানিয়েছে- খাগড়াছড়িতে কোরবানীর হাট জমে উঠেছে। চাহিদা থাকায় দেশের সমতল ভূমিতেও খাগড়াছড়ি গরু যাচ্ছে। এ হাটে প্রায় ২ কোটি টাকার মত লেনদেন হয়েছে।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জরহর লাল চাকমা জানান, খাগড়াছড়িতে এবার  ৫৪ হাজারেও বেশি পশু কোরবানি প্রস্তুত রয়েছে ।চাহিদা রয়েছে প্রায় ২৬ হাজার। অতিরিক্ত পশু দেশের বিভিন্ন এলাকায় রফতানির কথা জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।  
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, গরুরহাট কেন্দ্রিক গোয়েন্দা নজরদারিসহ সার্বক্ষণিক পুলিশের টহল রয়েছে। সেন্টার্লি কন্টোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। হাটে পশু বিক্রি করে বিক্রেতারা যেনো অর্থ নিয়ে নিরাপদে বাড়ি যেতে পারে পুলিশ সে বিষয়ে সজাগ রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।