বাসস
  ২৪ জুন ২০২৪, ১১:০২

দিনাজপুরে আমন ও পেঁয়াজের বীজসহ সার-কীটনাশক বিতরণ

দিনাজপুর, ২৪ জুন, ২০২৪ (বাসস) : জেলার ১৩ টি উপজেলায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ২২ হাজার ৬০০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে আমন ধানের বীজ এবং সাড়ে ৬ হাজার কৃষকদের পেঁয়াজ বীজ ও রাসায়নিক সার-কীটনাশক বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা  হয়েছে।
দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চলতি বছর কৃষি অধিদপ্তর এ জেলার ১৩ টি উপজেলা ও ১০৪টি ইউনিয়নে ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে এ কৃষি প্রণোদনা বরাদ্দ প্রদান করেছেন। জেলার তৃণমূল পর্যায়ে পর্যন্ত জরিপ চালিয়ে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত কৃষকদের মাঝে এ কৃষি অধিদপ্তরের প্রণোদনার ৫ কেজি করে  আমন ধানের বীজ, ২০ সার,  এক কেজি পেঁয়াজের বীজ, ৪০ কেজি রাসায়নিক সার ও এক কেজি দানাদার কীটনাশক বিতরণ কার্যক্রম গতকাল রোববার বিকেল থেকে শুরু করা হয়েছে। 
তিনি বলেন, জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা হাকিমপুরে গতকাল রোববার বিকেলে কৃষকদের মাঝে এ প্রণোদনার আমন ধানের বীজ, পেঁয়াজের বীজ, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন রাজ। 
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার আরজেনা বেগম জানান, একটি পৌর সভা ও ৩ টি ইউনিয়নের ১ হাজার কৃষকের মাঝে প্রত্যেকে ৫ কেজি আমন ধানের বীজ, ১০ কেজি ডিওপি, ১০ কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয় এবং ৩০ জন কৃষককে ১ কেজি গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ বীজ, ২০ কেজি ডিওপি ও ২০ কেজি এমওপি সার, এক কেজি দানাদার কীটনাশক, প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, জেলার তালিকাভুক্ত কৃষকদের একই পদ্ধতিতে এ কৃষি প্রণোদনার বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। 
কৃষি বিভাগের সূত্রটি জানান, আজ সোমবার থেকে আগামী ২৭ জুন পর্যন্ত জেলার ১৩ টি উপজেলায় কৃষি বিভাগের বরাদ্দকৃত প্রণোদনার আমন ধানের বীজ, ঁেপয়াজের বীজ, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। বরাদ্দকৃত কৃষি পণ্য ও সার সব উপজেলায় গতকাল রোববার প্রেরণ করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের মধ্যে সঠিকভাবে এসব কৃষি পণ্য ও উপকরণ বিতরণ কার্যক্রম  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাগণ নিজেরা উপস্থিত থেকে সুষ্ঠু ভাবে বিতরণ করবেন। বিতরণ কার্যক্রম জেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। কৃষি বিভাগের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সুষ্ঠুভাবে বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা। 
তিনি জানান, উন্নত জাতের অধিক ফলনশীল ব্রি- ৯০ ও ব্রি- ৯১ জাতির ধানের ৫ কেজি করে বীজ তালিকাভুক্ত কৃষকদের প্রদান করা হচ্ছে। বীজতলা তৈরি করে প্রণোদনার রাসায়নিক সার দিয়ে বীজ রোপণ করবেন।  সেই সাথে বালাইনাশক দূর করতে এক কেজি করে দানাদার কীটনাশক প্রদান করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এসব ধানের বীজ রোপণের জন্য উপযুক্ত হলেই আমন ধানের জমিতে  কৃষকেরা  সারি বদ্ধ করে চারা রোপ ণ করবেন। প্রণোদনার দেওয়া বীজে চাষ করা  জমিগুলো, আমন ধানের চারা রোপণ থেকে, ধান- কাটা পর্যন্ত কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীরা কৃষকদের সাথে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে ধান চাষের, অধিক ফলের বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। তিনি বলেন, আশা করা যাচ্ছে এ নতুন জাতের উদ্ভাবন করা ধান শতকে ৪০ কেজি অর্থাৎ এক মণ করে ফলন হবে বলে তারা আশা করছেন। 
এদিকে দেশের পেঁয়াজের সংকট দূর করতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে জেলার ১৩ টি উপজেলায় সাড়ে ৬ হাজার ক্ষুদ্র প্রান্তিক চাষীদের মাঝে উন্নত জাতের এক কেজি পেঁয়াজের বীজ, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রদান করা হবে। বরাদ্দ কৃত কৃষকরা তাদের ২০ শতক জমিতে এ গ্রীষ্মকালে পেঁয়াজের বীজ বোপণের মাধ্যমে চাষ করবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে গ্রীষ্ম কালীন পেঁয়াজ যাতে বাম্পার ফলন  ও আশানুরুপ ভালো ফলাফল পাওয়া যায় সে বিষয়টি অর্জন করতেই কৃষি  বিভাগ কৃষকদের সব সময় পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে যাবেন। আশানুরূপ ফলন অর্জিত হলে  আগামীতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ আরো বৃদ্ধি করা যাবে। বছরে দু'বার দেশে পেঁয়াজের চাষ সফল ভাবে অর্জিত হলে পেঁয়াজের সংকট থাকবে না। দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ দেশের  চাহিদা মিটিয়ে বাইরে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। 
তিনি বলেন, এজন্য কৃষি বিভাগ পরিকল্পনা গ্রহণে,  বরাদ্দকৃত প্রণোদনায়, কৃষকদের উন্নত জাতের আমন ধান চাষে, অধিক ফলন ফলানো এবং গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে বাম্পার ফলনের লক্ষ্য মাত্রা সফল করতে কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীরা কৃষকদের সাথে সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাবেন।