বাসস
  ২৭ জুন ২০২৪, ১৮:৩২

ভিকারুননিসার ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় প্রকাশ

ঢাকা, ২৭ জুন, ২০২৪ (বাসস) : রাজধানীর ভিকারুননিসার ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে দেয়া রায় প্রকাশিত হয়েছে।
বয়সের নিয়ম না মানার অভিযোগে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখায় ভর্তিকৃত প্রথম শ্রেণির ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল থাকবে বলে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চের দেয়া রায় সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। গত ২১ মে রায়টি দেয়া হয় । ২৯ পৃষ্ঠায় দেয়া এ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।
রায়ে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট বয়সসীমার পরিপ্রেক্ষিতে প্রার্থীদের (আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের) ফিল্টার করার জন্য সেফটওয়্যারে কোনো প্রোগ্রাম স্থাপন করা হয়নি। এরমধ্যে গত বছরের ২ ডিসেম্বর ১৬৯ শিক্ষার্থীদের ভর্তি সংশ্লিষ্ট অনিয়মে জড়িতদের চিহ্নিত করতে অনুসন্ধান করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরণের পুনরাবৃত্তি না হয় এবং নিষ্পাপ শিশুরা কর্তৃপক্ষের অবহেলা, অদক্ষতা ও অপকর্মের বিষয়বস্তু না হতে হয়।
রায়ে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভিকারুন্নিসার পুরো ভর্তি প্রক্রিয়া অনুসন্ধান করবে। অনুসন্ধান কমিটি আরও ভালো ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করার এবং অপরাধীদের খুঁজে বের করার পরামর্শ দেবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আইন অনুযায়ী চিহ্নিত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবকে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি করতে বলা হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব মর্যাদার নিচে নয় এমন কর্মকর্তার নেতৃত্বে কমিটি করতে হবে। বাকী দুই সদস্যের মধ্যে একজন শিক্ষা বোর্ড থেকে অপরজন আইটি এক্সপার্ট বুয়েট থেকে যুক্ত করতে হবে। এই রায়ের অনুলিপি শিক্ষা সচিব, বুয়েটের উপাচায্য এবং শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে।
ভিকারুননিসায় ভর্তি নিয়ে বয়সের নিয়ম না মানার অভিযোগ এনে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি-ইচ্ছুক দুই শিক্ষার্থীর মা গত ১৪ জানুয়ারি রিট করেন। সে রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) একটি স্মারক হাইকোর্টে উপস্থাপন করে। মাউশির ওই আদেশ মতে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা অনুসরণ করেনি। ১ জানুয়ারি ২০১৭ সালের আগে জন্মগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার প্রক্রিয়া ছিল বিধিবহির্ভূত। এসব ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০১৫ সালে জন্মগ্রহণকারী ১০ জন ও ২০১৬ সালে জন্মগ্রহণকারী শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫৯ জন। এসব শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে শিগগিরই মাউশিকে অবহিত করার অনুরোধ করা হলো।
এরপর স্কুল কর্তৃপক্ষ ১৬৯ জনের ভর্তি বাতিল করে। ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের পর এখন অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে শূন্য আসনে ভর্তি নিতে গত ৬ মার্চ নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট বিভাগ। ওই আদেশের বিরুদ্ধে বাতিলকৃত শিক্ষার্থীর অভিভাবক আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আপিল বিভাগ গত ২০ মার্চ হাইকোর্ট বিভাগের জারি করা রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেন। এই সময় পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল ও অপেক্ষমাণদের ভর্তির ওপর স্থিতাবস্থা দেয়া হয়। এরমধ্যে ভর্তি বাতিল হওয়া ১২০ শিক্ষার্থীর পক্ষে আরেকটি রিট করা হয়। সে রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৫ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেয়। এরপর পৃথক রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে গত ২১ মে রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট বিভাগ। এখন ২৯ পৃষ্ঠার দেয়া ওই রায়ের অনুলিপ প্রকাশ করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়