বাসস
  ০৫ জুলাই ২০২৪, ২০:৪৩

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি

সিলেট,  ৫ জুলাই, ২০২৪ (বাসস) : সিলেটে নদ নদীর পানি কমতে থাকার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
গত ৩দিন বৃষ্টিপাত তুলনামূলকভাবে কিছুটা কমলেও সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি এখনও একটি পয়েন্ট ছাড়া সবগুলো পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ৫টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরমধ্যে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ৬৪ সেন্টিমটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা আগের দিন ৭১ সে.মি. ছিলো। একই নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ০৫ সেন্টিমটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা আগের দিন ৮ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। এছাড়া কুশিয়ারার পানি আমলশীদ পয়েন্টে ১৩০ সেন্টিমটার উপরে, যা আগের দিন বিপদসীমার ১৫২ সে.মি উপরে ছিলো। এ নদীর শেওলা পয়েন্টে ৩৮ সে.মি উপরে রয়েছে, যা আগের দিন ৪৭ সে.মি. উপরে ছিলো। কুশিয়ারা নদী ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১০১ সে.মি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা আগের দিন ছিলো ১০৩ সে.মি। একই নদীর শেরপুর পয়েন্টে বিপদ সীমার ০৪ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, আগের দিন যেখানে ১৫ সে.মি.উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিলো।
সিলেটের লোভাছড়া, সারি নদী, জাফলং নদী, গোয়াইন নদী ও ধলাই নদীর সবগুলো পয়েন্টে পানি গত ২৪ ঘন্টায় কিছুটা কমে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত গত ৩ দিন উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢল কমেছে বলে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। গত ৩দিন সিলেটে দিনের বেলায় কোন বৃষ্টিপাত হয়নি। 
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেলার ১৩ উপজেলায় ৯৬টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত। ১ হাজার ১৬০টি গ্রামের ৬ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৩ জন মানুষ বন্যা কবলিত। জেলার ৬৪৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ৯ হাজার ২৩৪ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার্ত মানুষদের মধ্যে সরকারি ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। বন্যার্থ মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে সিলেট জেলায় ১২৬টি মেডিকেল টিম মাঠে কাজ করছে। তারা বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়ে বন্যার্ত মানুষকে পানিবাহিত রোগ থেকে মুক্ত রাখতে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ওরস্যালাইন, ডায়রিয়া প্রতিরোধী সহ প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বন্যার্ত মানুষের জরুরী স্বাস্থ্য সেবায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহের শেষের দিকে বৃষ্টিপাত আরও বাড়তে পারে।
শুক্রবার আগামী পাঁচ দিনের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানায়, শুক্রবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে। একই সময়ে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরেরদিন শনিবার রংপুর বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে। রোববারও দেশের অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এ সময় দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়া সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ সময়ের শেষ দিকে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়