বাসস
  ২৭ জুলাই ২০২৪, ২১:১১

বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গিরা বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নারায়ণগঞ্জ, ২৭ জুলাই, ২০২৪ (বাসস) : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গিরা সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
তিনি বলেন, একটি মহল সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। এখনো বহির্বিশ্বে বসে কিছু লোক সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে মানুষকে উস্কে দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। মন্ত্রী এসব গুজবের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সঠিক তথ্য প্রকাশ করার আহ্বান জানান।
শনিবার দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দুষ্কৃতকারীদের নাশকতা ও সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন শেষে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নরসিংদী জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন থানা ও পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে অস্ত্র লুট করে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে লুটকৃত অস্ত্র বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গিরা পুলিশের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করেছে। 
আসাদুজ্জামান খান বলেন, কোটা আন্দোলনের সময় পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা অনেক ধৈর্য্যসহকারে কাজ করেছে। গত ১৯ জুলাই আন্দোলনকারীদের সাথে মিশে গিয়ে বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গিরা পুলিশের বিশেষায়িত সংস্থা পিবিআই অফিস, পাসপোর্ট অফিস, জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, পুলিশ বক্সসহ নানা স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। ২০ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জের মা হাসপাতাল, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, হাইওয়ে পুলিশ ব্যারাক, শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ বক্সে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এছাড়া মদনপুর সার্কেল অফিসে হামলা, ৬ পুলিশকে পিটিয়ে গুরুতর জখম ও মদনপুর পুলিশ বক্স ভাংচুর করে। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নগরভবনে অগ্নিসংযোগ, সদর থানা, নারায়ণঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। 
মন্ত্রী বলেন, আন্দোলনকারীদের মূল টার্গেট ছিল পুলিশ, সাংবাদিক এবং আওয়ামী লীগের কর্মীরা। দুইজন সাংবাদিকসহ কয়েকজন পুলিশকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছে। গাজীপুরের জনপ্রিয় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের পিএসকে পিটিয়ে হত্যা করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে তা-ও আপনারা দেখেছেন। 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করেছিলাম ছাত্ররা সরকারের উদ্যোগ ও উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবেন, কিন্তু দুঃখজনকভাবে তারা সেটি করেননি। এতেই প্রমাণ হয় আন্দোলন আন্দোলনকারীদের হাতে ছিল না। 
তিনি বলেন, জামায়াত-বিএনপি স্বাধীনতা চায়নি। তারা দেশকে অকার্যকর করার জন্য এবং দেশে জঙ্গিবাদ উত্থান ঘটানোর জন্য আন্দোলনের নামে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। আন্দোলনকারীরা তাদের ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করেছে। 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা দেশের সম্পদ বিনষ্ট করার জন্য ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে তারা দেশের জনগণের শত্রু ও জাতির শত্রু।  
কোটা আন্দোলনের তিন সমন্বয়কের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে সেফ কাস্টডিতে নেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাবাদ শেষে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। 
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব জাহাংগীর আলম, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি’র কমিশনার হাবিবুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল প্রমুখ।