বাসস
  ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১:০৯

নাশকতা প্রতিরোধে চট্টগ্রামের প্রতি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে কমিটি হচ্ছে

চট্টগ্রাম, ২৮ জুলাই ২০২৪ (বাসস) : নাশকতা প্রতিরোধে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। কমিটিতে এলাকার মসজিদগুলোর ইমাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে সদস্য করা হবে। এ কমিটি প্রতি মাসে সভা করবে।
আজ রোববার সকালে লালদিঘি পাড়স্থ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৪২তম সাধারণ সভায় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ নির্দেশনা দেন। 
মেয়র বলেন, সম্প্রতি কোটাবিরোধী আন্দোলনের আড়ালে দেশি-বিদেশি কিছু অপশক্তি মিলে দেশকে অকার্যকর করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার সাহসী ভূমিকার কারণে এই অপচেষ্টা প্রতিহত করা গেছে। আমি ১৯৬৬ সাল থেকে রাজনীতি করি। উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত ছিলাম, মুক্তিযুদ্ধ করেছি, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছি। আমার অভিজ্ঞতার আলোকে এবারের যে কার্যক্রম তাকে কোনভাবেই আন্দোলন বলতে পারি না। এটা ছিল রাষ্ট্রধ্বংসের আন্দোলন। না হলে, সেতু ভবন, মেট্রোরেল স্টেশন, হানিফ ফ্লাইওভার, বিটিভি, পুলিশ বক্স এগুলো কী দোষ করেছে ? এগুলো কেন ধ্বংস করা হলো ? আন্দোলনের নামে টোকাই, ভাড়া করা লোক, বেকার যুবকদের দিয়ে দেশজুড়ে নাশকতা চালানো হয়েছে। 
মেয়র বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আছে। তবে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে আমাদেরও কিছু নৈতিক দায়িত্ব আছে। জনগণের জান-মাল রক্ষায় কাউন্সিলররা প্রতিটি ওয়ার্ডে নাশকতা প্রতিরোধে অরাজনৈতিক কমিটি গঠন করুন। কমিটিতে এলাকার মসজিদের ইমাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষদের সদস্য করে প্রতি মাসে সভা করে এলাকার মানুষদের মাঝে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালান। নাশকতামূলক যেকোন কার্যক্রমকে তৃণমূলেই রুখে দিন।’
এ ছাড়াও  কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যক্রমের গতি বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়ে মেয়র  বলেন, বর্ষা চলে এসেছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কার্যক্রমের গতি বাড়াতে হবে। কাউন্সিলররা বিষয়টি তদারকি করবেন। লোক সঙ্কট থাকলে তাও জানাবেন। তবে, লোক আছে ৫০ জন, কাজ করবে ৩০ জন, বাকীরা কাজ না করে বেতন খাবে তা হবে না। যারা কাজ না করে বেতন নিচ্ছে তাদের তালিকা করে অব্যাহতি দেয়া হবে। 
যে সমস্ত সড়কের নামকরণ করা হয়নি এবং নতুন যেসব সড়ক নির্মাণ করা হবে সেগুলোকে চট্টগ্রামের বিশিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণের ঘোষণা দেন মেয়র। মেয়র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সবগুলো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে সুচিকিৎসা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নিতে বলেন।
সিডিএ’র প্রতিনিধির উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসণে সিডিএ’র প্রকল্প সেনাবাহিনী বাস্তবায়ন করছে। তবে, কাজের বিষয়ে আপনাদেরই জবাবদিহি করতে হবে। সুতরাং, প্রকল্প দ্রুত শেষ করার বিষয়ে কাজ করুন। বহদ্দারহাটে চাঁন মিয়া রোডে মানুষ হাঁটতে পারছে না। এলাকাবাসী দল বেঁধে আমার কাছে এসে জানিয়েছে রাস্তার অনেক জায়গায় খালের মতো গর্ত। তারা তো সিডিএ চেনে না, মনে করে এ কাজের দায়িত¦ও আমার। আপনারা কাউন্সিলরদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করুন।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি সিনিয়র কেমিস্ট রুবাইয়াত তাহরীম সৌরভ পর্যাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটের অভাবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছে না জানালে মেয়র জেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করার নির্দেশনা দেন।
নগরীতে ছিনতাই ও মাদকের বিস্তার রোধে পুলিশকে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর পরামর্শ দেন কাউন্সিলররা।
সভায় চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আমিন, প্যানেল মেয়রবৃন্দ, কাউন্সিলরবৃন্দসহ চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।