শিরোনাম
॥ মনসুর আহম্মেদ ॥
রাঙ্গামাটি, ৩, সেপ্টেম্বর, ২০২৪ (বাসস): অব্যাহত পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যায় এবার রাঙ্গামাটিতে ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার বাঘাইছড়ি, লংগদু বরকল, বিলাইছড়ি, নানিয়াচর ও জুরাইছড়িসহ বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ফসলী জমি পানিতে ডুবে আছে।
রাঙ্গামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ মনিরুজ্জামান বাসসকে জানান, বন্যার পানিতে রাঙ্গামাটিতে এবার ২ হাজার ১০৩ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ৭ হাজার ৮১৯ টন ফসল নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা দাঁঁড়িয়েছে প্রায় ১১হাজারের মতো। তিনি জানান, রাঙ্গামাটি জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলায়। এবারের বন্যায় জেলা-উপজেলায় মোট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মতো। আমরা চুড়ান্ত প্রতিবেদন হিসেবে মন্ত্রণালয়ে পাঠালেও ক্ষতির পরিমাণ এর চেয়ে কম-বেশি হতে পারে জানান তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি আঞ্চলিক কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক তপন কুমার পাল বাসসকে জানান, এবারের বন্যায় প্রায় ১১ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে আউশ, আমন, গ্রীষ্মকালীন সবজি, আদা, হলুদসহ বেশকিছু ফসল। আর শাকসবজি পচে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে অসহায় হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। তিনি জানান, পানি পুরোপুরি নেমে গেলে এসব জমিতে বোরো ধান, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন ও টমেটোসহ শাকসবজি চাষাবাদের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এজন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে চাষিদের পর্যাপ্ত সহায়তা করা হবে।
তিনি বাসসকে আরো জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারী প্রণোদনা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কৃষকদের ধানসহ অন্যান্য বীজ দেয়া হবে। এরই মধ্যে খাগড়াছড়ি জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে দুই টন ধানের বীজ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আসন্ন রবি মৌসুমে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার কৃষকদের শীতকালীন সবজি ও বোরো ধানের বীজ দেয়া হবে। বর্তমানে রাঙ্গামাটিতে আমনের বীজ রোপণের সুযোগ না থাকায় কেবল খাগড়াছড়িতে দুই টন বীজ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।’
কৃষি জমির পাশাপাশি এসব এলাকার রাস্তা-ঘাটেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় পানি নামতে শুরু করায় বিভিন্ন উপজেলায় ফসলী জমিসহ রাস্তা-ঘাটের সর্বত্র ক্ষতের চিত্র এখন দৃশ্যমান।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, পানি কমতে শুরু করলেও জেলায় এখনো পানিবন্দি প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি উপজেলায় ৯২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেয়া হলেও ৪৭ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে। বাকিগুলো পানি কমলে বিতরণ করা হবে জানানো হয়।